
অতি সম্প্রতি লোকসভা এবং রাজ্যসভায় পাশ হওয়া ওয়াকফ সংশোধনী বিল পরিণত হল আইনে। শনিবার এই বিলে সই করেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পরেই এই বিল আইনে পরিণত হল। গত ২ এপ্রিল লোকসভায় এবং ৩ এপ্রিল রাজ্যসভায় ভোটাভুটিতে পাশ হয় ওয়াকফ (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল।
ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিজ্ঞপ্তি ইতিমধ্যেই প্রকাশ করা হয়েছে ভারত সরকারের গেজেটে। শনিবার রাষ্ট্রপতি সই করবার পর রাত ১০.৫১ মিনিটে কেন্দ্রীয় আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একথা জানানো হয়। নতুন এই আইনের নাম হল – ইউনিফায়েড ওয়াকফ ম্যানেজমেন্ট, এমপাওয়ারমেন্ট, এফিসিয়েন্সি অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট (UMEED) অ্যাক্ট, ১৯৯৫।
পাঁচ মুসলিম লিগ সাংসদ রাষ্ট্রপতির কাছে বিলটি পুনঃবিবেচনার জন্য সংসদে ফেরত পাঠানোর দাবি জানালেও তাতে সম্মত না হয়ে বিলে সই করেছেন রাষ্ট্রপতি। কংগ্রেস সহ অন্যান্য বিরোধীদলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তারা এই বিলের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবে। ইতিমধ্যেই এই বিল বাতিলের দাবি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে চারটি পিটিশন দাখিল হয়েছে।
গত বুধবার লোকসভায় প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে চলা বিতর্কের পর পাশ হয় ওয়াকফ অ্যামেন্ডমেন্ট বিল। আলোচনার শেষে ভোটাভুটিতে বিলের পক্ষে ভোট পড়ে ২৮৮টি এবং বিপক্ষে ২৩২। দীর্ঘ আলোচনার শেষে প্রায় ১ ঘণ্টা ৪৯ মিনিট ধরে ভোট প্রক্রিয়া চলে। লোকসভায় এই বিল পেশ করেন সংখ্যালঘু বিষয়ক দপ্তরের মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। একইভাবে রাজ্যসভাতেও বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ১২৮ (পক্ষে) ও ৯৫ (বিপক্ষে) ভোটের ব্যবধানে ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল পাস হয়।
লোকসভায় এই বিল পেশ করার সময় কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক দপ্তরের মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু বলেন, এই সংস্কার এক ইতিবাচক সংস্কার। যাকে আটকাতে চেষ্টা করছে বিরোধীরা। এই বিল প্রসঙ্গে বিজেপির বক্তব্য, ওয়াকফের নামে এক নির্দিষ্ট গোষ্ঠী সমস্ত সুবিধা ভোগ করছেন। সাধারণ মুসলিমদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। নতুন আইন অনুসারে সাধারণ মুসলিমরা সুফল পাবেন।
অন্যদিকে এই বিলের বিরোধিতা করে কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ বলেন, এই বিল ভারতের গণতান্ত্রিক কাঠামোর ওপর সরাসরি আক্রমণ। “যা শুধুমাত্র একটি আইনের উপর নয়। এটি সংসদের ভিত্তির উপর আক্রমণ এবং আমাদের সংবিধানের ওপর আক্রমণ।”
তিনি আরও বলেন, ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার এই সংশোধনীর মাধ্যমে চারটি প্রধান লক্ষ্য অর্জন করতে চায়। যা চারটি ‘ডি’ দ্বারা সংজ্ঞায়িত: সংবিধানকে দুর্বল করা (Diluting the Constitution), সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অবমাননা (Defaming minority communities), সমাজকে বিভক্ত করা (Dividing the society) এবং সংখ্যালঘুদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা (Disenfranchising minorities)।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন