সংসদের দুই কক্ষে পাশ হয়ে গেলেও ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে বিতর্ক নতুন আকার ধারণ করেছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই বিল বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভের পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টে এখনও পর্যন্ত এই বিলের বিরোধিতা করে একাধিক পিটিশন জমা পড়েছে। এই পিটিশনগুলি দাখিল করেছেন কংগ্রেস সাংসদ মহম্মদ জাভেদ, মিম সভাপতি আসাদুদ্দিন ওয়েইসি এবং আপ সাংসদ আমানাতুল্লাহ খান। এছাড়াও অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রোটেকশন অফ সিভিল রাইটস নামক এক এনজিও-র পক্ষ থেকেও শীর্ষ আদালতে এক পিটিশন দাখিল করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
কিষাণগঞ্জের কংগ্রেস সাংসদ মহম্মদ জাভেদ শুক্রবার ওয়াকফ সংশোধনী বিল ২০২৫-এর বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন জমা দেন। তিনি ওয়াকফ সংসদীয় বিল সংক্রান্ত যৌথ সংসদীয় কমিটিরও সদস্য ছিলেন। ওই দিনই একই পিটিশন জমা দেন এআইএমআইএম সভাপতি আসাদুদ্দিন ওয়েইসি। শনিবার এই বিষয়ে পিটিশন জমা দিয়েছেন ওখলা কেন্দ্রের সাংসদ আমানাতুল্লাহ খান।
এই বিলকে ‘অসাংবিধানিক’ দাবি করে আমানাতুল্লাহ খান জানিয়েছেন, এতে ভারতীয় সংবিধানের ধারা ১৪, ১৫, ২১, ২৫, ২৬, ২৯, ৩০ এবং ৩০০-এ লঙ্ঘিত হয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, এই বিলে মুসলিমদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক স্বায়ত্তশাসনকে লঙ্ঘন করা হয়েছে এবং সংখ্যালঘুদের অধিকারে হস্তক্ষেপ করা হয়েছে।
মিম সভাপতি ও সাংসদ আসাদুদ্দিন ওয়েইসি জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিল এবং রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিমদের নিয়োগ এই সূক্ষ্ম সাংবিধানিক ভারসাম্যকে বিঘ্নিত করে এবং ধর্মীয় গোষ্ঠী হিসেবে মুসলমানদের তাদের ওয়াকফ সম্পত্তির নিয়ন্ত্রণে থাকা অধিকারকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
গত বুধবার লোকসভায় প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে চলা বিতর্কের পর পাশ হয় ওয়াকফ অ্যামেন্ডমেন্ট বিল। আলোচনার শেষে ভোটাভুটিতে বিলের পক্ষে ভোট পড়ে ২৮৮টি এবং বিপক্ষে ২৩২। দীর্ঘ আলোচনার শেষে প্রায় ১ ঘণ্টা ৪৯ মিনিট ধরে ভোট প্রক্রিয়া চলে। লোকসভায় এই বিল পেশ করেন সংখ্যালঘু বিষয়ক দপ্তরের মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু।
একইভাবে রাজ্যসভাতেও বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ১২৮ (পক্ষে) ও ৯৫ (বিপক্ষে) ভোটের ব্যবধানে ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল পাস হয়। তবে বিলটি এখনও আইনে পরিণত হয়নি। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু স্বাক্ষর করলেই এই বিল আইনে পরিণত হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন