
চলতি বছরের শেষে বিহারে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে মোদী সরকারের ওয়াকফ বিল সমর্থনের ফলে চাপের মুখে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের দল জেডিইউ। সংসদে বিল সমর্থনের পর থেকে একে একে জেডিইউ ছাড়ার কথা ঘোষণা করছেন একাধিক মুসলিম নেতা। আরও অনেকেই একই পথে এগোতে পারেন বলে জানা যাচ্ছে।
বুধবার লোকসভায় ওয়াকফ বিল পাশের আগে নীতিশ কুমারের ঘনিষ্ঠ জেডিইউ নেতা তথা সে রাজ্যের বিধান পরিষদের সদস্য গুলাম ঘাউস এই বিলকে ‘মুসলিম বিরোধী’ বলে তা প্রত্যাহারের দাবি তুলেছিলেন। এমনকি কোনও ভাবেই এই বিল যাতে সমর্থন না করা হয়, সেজন্য দলীয় নেতৃত্বের কাছে আবেদনও জানান তিনি। কিন্তু তাঁর সেই অনুরোধ রাখা হয়নি। বুধবার গভীর রাতে লোকসভা এবং বৃহস্পতিবার গভীর রাতে রাজ্যসভায় পাশ হয় ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল।
এরপর থেকেই জেডিইউ-তে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। গুলাম ঘাউস আনুষ্ঠানিক ভাবে এখনও দল ছাড়েননি। তবে বিহারের জেডিইউ-এর দুজন প্রভাবশালী মুসলিম নেতা কাশিম আনসারি এবং মহম্মদ নওরাজ দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছেন। জেডিইউ সভাপতি তথা বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের কাছে নিজেদের পদত্যাগ পত্র পাঠিয়েছেন। জানা যাচ্ছে, এরা লালুপ্রসাদের আরজেডি-তে যোগ দিতে পারেন। এছাড়া শুক্রবার জেডিইউ সংখ্যালঘু বিভাগের সাধারণ সম্পাদক তাবরেজ সিদ্দিকী আলিগ পদত্যাগ করেছেন।
অন্যদিকে, ওয়াকফ বিল নিয়ে বির্তকের আবহেই কয়েক মাস জেডিইউয়ের প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ তথা পসমন্দা (অনগ্রসর) মুসলিম নেতা আলি আনোয়ার কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। ফলে নীতিশ কুমারের মোদী ঘনিষ্ঠের পর থেকে একের পর এক জেডিইউ মুসলিম নেতা দল থেকে সরে যাচ্ছেন।
এর মধ্যে চলতি বছরই সেরাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। ফলে এই ওয়াকফ বিলের প্রভাবে তৈরি হওয়া পরিস্থিতি বিহারের ভোটব্যাংকের উপর পড়তে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। কারণ বিহারে অনগ্রসর মুসলিম সম্প্রদায়ের একটি বড় অংশ এতদিন নীতিশ কুমারের জেডিইউয়ের সঙ্গেই ছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ার ফলে সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক হারাতে পারেন নীতিশ কুমার। যার ফলে ভোটের ফলাফলেও প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন