* ১২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চললো বিতর্ক।
* ২৮৮-২৩২ ভোটে লোকসভায় পাঁশ ওয়াকফ অ্যামেন্ডমেন্ট বিল।
* আজ বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় পেশ করা হবে এই বিল।
* ওয়াকফ বিলের নাম পরিবর্তন করে ইউনিফাইড ওয়াকফ ম্যানেজমেন্ট এমপাওয়ারমেন্ট, এফিসিয়েন্সি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (UMEED) বিল রাখা হবে।
লোকসভায় প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে চলা বিতর্কের পর পাশ হল ওয়াকফ অ্যামেন্ডমেন্ট বিল। বিলের পক্ষে ভোট পড়ে ২৮৮টি এবং বিপক্ষে ২৩২। দীর্ঘ আলোচনার শেষে প্রায় ১ ঘণ্টা ৪৯ মিনিট ধরে ভোট প্রক্রিয়া চলে। সাম্প্রতিক সময়ে লোকসভায় কোনও বিষয়ে এটাই দীর্ঘতম বিতর্ক। আজ বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় এই বিল পেশ করা হবে। গতকাল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু জানান, ওয়াকফ বিলের নাম পরিবর্তন করে ইউনিফাইড ওয়াকফ ম্যানেজমেন্ট এমপাওয়ারমেন্ট, এফিসিয়েন্সি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (UMEED) বিল রাখা হবে।
গতকাল কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক দপ্তরের মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু লোকসভায় এই বিল পেশ করেন। এরপর প্রায় ৬০ জন সাংসদ দীর্ঘক্ষণ ধরে এই বিলের পক্ষে ও বিপক্ষে মত প্রকাশ করেন। বুধবার দুপুর ১২টায় শুরু হওয়া এই আলোচনা শেষ হয় বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ৬ মিনিটে। এরপর শুরু হয় ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া। যা শেষ হয় রাত ১টা ৫৬ মিনিটে।
উল্লেখযোগ্যভাবে বিরোধী সাংসদরা প্রায় ১৩২টি সংশোধনী আনলেও তার একটিও গৃহীত হয়নি। বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় এই বিল পাশ হয়ে গেলে রাষ্ট্রপতির অনুমতি সাপেক্ষে পরবর্তীতে তা আইন হিসেবে রূপান্তরিত হবে।
গতকাল কিরেণ রিজিজু এই বিল লোকসভায় পেশ করার পর বিতর্কে অংশগ্রহণ করে কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ বলেন, “আপনি কোন সম্প্রদায়কে বিভ্রান্ত করতে চান? ভারতের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করা সেই সম্প্রদায়? ১৮৫৭ সালে মঙ্গল পাণ্ডের সাথে আত্মত্যাগকারী সম্প্রদায়? আপনি এমন একটি সম্প্রদায়ের সুনাম নষ্ট করতে চান যেখানে ২ লক্ষ উলেমা শহীদ হয়েছিলেন? আপনি সেই সম্প্রদায়ের বদনাম করতে চান যারা ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় আমাদের সমর্থন করেছিল? আপনি সেই সম্প্রদায়ের বদনাম করতে চান যারা ডান্ডি মার্চকে সমর্থন করেছিল, আপনি সেই সম্প্রদায়ের নাম কলঙ্কিত করতে চান।
বিতর্কে অংশ নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করেন যে ভোট ব্যাংকের ভয়ের জন্য এই বিলটি মুসলিমদের ধর্মীয় বিষয়ে এবং ওয়াকফকে দান করা সম্পত্তিতে হস্তক্ষেপ করবে বলে প্রচার করা হচ্ছে।
ওয়াকফ (সংশোধনী বিল, ২০২৫)-এ কী কী আছে?
ব্যবহারকারী কর্তৃক ওয়াকফ হিসেবে চিহ্নিত সম্পত্তি বিতর্কিত না হলে বা সরকারি জমি হিসেবে চিহ্নিত না হলে তা থাকবে
কোনও উপজাতীয় জমি ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করা যাবে না
সুরক্ষিত স্মৃতিস্তম্ভ এবং এলাকা আর ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করা যাবে না
সরকারি সম্পত্তি ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করা যাবে না
পাঁচ বছর ধরে ইসলাম ধর্ম পালনকারী কোনও ব্যক্তিই শুধুমাত্র ওয়াকফকে সম্পত্তি দান করতে পারবেন
ওয়াকফ উৎসর্গের মাধ্যমে উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত মহিলাদের বঞ্চিত করা যাবে না; বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত এবং এতিমদের জন্য বিশেষ বিধান
ছয় মাসের মধ্যে ওয়াকফের আয় এবং সম্পত্তি পোর্টালে আপলোড করতে হবে
মুসলমানদের দ্বারা তৈরি ট্রাস্ট ওয়াকফ হিসেবে বিবেচিত হবে না
কেন্দ্রীয় ও রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিম, মহিলা সদস্য থাকবে
কোনও সম্পত্তি ওয়াকফের মালিকানাধীন নাকি সরকারি মালিকানাধীন তা নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করার জন্য কালেক্টরের উপরের আধিকারিক সিদ্ধান্ত নেবেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন