

উত্তরাখণ্ডের কাশীপুরে এক দক্ষিণপন্থী সংগঠনের সদস্যদের হাতে নিগৃহীত হলেন এক কাশ্মীরি শাল বিক্রেতা। গত সোমবারের এই ঘটনা জানা গেছে শুক্রবার। জানা গেছে, ওই শাল বিক্রেতাকে শারীরিকভাবে হেনস্থা করা হয় এবং তাঁকে ধর্মীয় শ্লোগান উচ্চারণ করতে বাধ্য করা হয়। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। শুক্রবার এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত বজরঙ দলের সদস্য অঙ্কুর সিংকে আটক করেছে পুলিশ।
সংবাদসংস্থা পিটিআই-এর সূত্র অনুসারে, উধম সিং নগরের এসএসপি মণিকান্ত মিশ্র জানিয়েছেন, এই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পরেই পুলিশ ব্যবস্থা নেয়। অতি দ্রুত সোশ্যাল মিডিয়া থেকে এই ভিডিও মোছার ব্যবস্থা করা হয় যাতে এই ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা না ছড়িয়ে পড়ে।
দ্য ডেকান হেরাল্ডের প্রতিবেদন অনুসারে, কাশ্মীরের শাল বিক্রেতা বিলাল আহমেদ গণি জানিয়েছেন, জনা ছয়েক অজ্ঞাতপরিচয় যুবক তাঁকে মানপুর অঞ্চলের উজালা হাসপাতালের সামনে থামতে বলে এবং তাঁকে ধর্মীয় শ্লোগান দেবার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। তিনি তা অস্বীকার করলে তাঁকে মৌখিক ও শারীরিকভাবে নিগ্রহ করা হয়। তাঁর আরও অভিযোগ, ওই যুবকরা তাঁর কাছ থেকে শাল এবং টাকাপয়সা কেড়ে নেবার চেষ্টা করে। তাঁকে বলা হয়, ওই অঞ্চলে ফের আসলে তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলা হবে।
পুলিশ সূত্র অনুসারে কুপওয়াড়া থেকে বিলাল আহমেদ গত নয় বছর ধরে প্রতি শীতে ওই অঞ্চলে আসেন এবং বাড়ি বাড়ি ঘুরে শীতের সামগ্রী বিক্রি করেন। তিনি জানান, ওই যুবকরা তাঁর পথ আটকে তাঁকে জিজ্ঞাসা করে, তিনি কোথা থেকে এসেছেন? যার উত্তরে তিনি জানান তিনি কাশ্মীর থেকে এসেছেন। এর পরেই তাঁরা আমাকে নিগ্রহ শুরু করে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুসারে, এই ঘটনার ভিডিও ইন্সটাগ্রামে পোষ্ট করে অঙ্কুর সিং নামক এক যুবক। ওই ভিডিওতে পাঁচ যুবককে শাল বিক্রেতাকে নিগ্রহ করতে দেখা যায়। যদিও পরে ওই ভিডিও ডিলিট করে দেওয়া হয়।
উধমপুর থানার সূত্র অনুসারে, এই ঘটনায় ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ধারা ১৯১(২), ১১৫(২), ৩৫১(৩), ৩৫২, ৩০৪, ৬২, ২৯২ এবং ১২৬(২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ওই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করেছে পুলিশ এবং তাদের আটক করা হয়েছে।
এই ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে দ্য জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (JKSA)। ন্যাশনাল কনফারেন্সের (NC) লোকসভা সাংসদ রুহুল্লাহ মেহেদি এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, জোরপূর্বক কিছু বলিয়ে নিয়ে কোনো নাগরিককে দেশপ্রেম প্রমাণের জন্য বাধ্য করা সাংবিধানিক স্বাধীনতা লঙ্ঘন করে।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন