

রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সম্মতির পর উত্তরপ্রদেশে জারি হয়ে গেল ফ্যাক্টরি (অ্যামেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট। নতুন আইন অনুসারে, উত্তরপ্রদেশে কারখানায় এখন থেকে শ্রমিকদের দিনে সর্বাধিক ১২ ঘণ্টা কাজ করানো যাবে। যোগী আদিত্যনাথ পরিচালিত উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকারের দাবি, এই আইন জারির ফলে রাজ্যে শিল্পে উন্নতি হবে, উৎপাদন বাড়বে এবং আরও কর্মসংস্থান হবে।
নতুন আইনের বিধি অনুসারে, শ্রমিকদের লিখিত সম্মতির ভিত্তিতে তাঁদের একটানা, বিরামহীনভাবে ৬ ঘণ্টা কাজ করানো যাবে। এছাড়াও কাজের চাপের ওপর ভিত্তি করে ত্রৈমাসিক ক্ষেত্রে ওভারটাইমের সময় ৭৫ ঘণ্টা থেকে বাড়িয়ে ১৪৪ ঘণ্টা করা যাবে। নতুন আইন জানাচ্ছে, দৈনিক ১২ ঘণ্টা কাজ করানো গেলেও সাপ্তাহিক ক্ষেত্রে এই সময়সীমা ৪৮ ঘণ্টার বেশি হবে না।
নতুন আইনের বিধিতে মহিলাদের রাতের শিফটে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে মহিলা কর্মীদের লিখিত অনুমতি ছাড়া তাঁদের রাতের শিফটে কাজ করানো যাবে না। মহিলা কর্মীদের রাতের শিফটে কাজ করানো হলে তাঁদের নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যজনিত বিষয়ে বিশেষ নজর দিতে হবে।
নতুন আইন অনুসারে, দৈনিক কাজের নির্ধারিত সময়সীমার পর অতিরিক্ত কাজ করানো হলে শ্রমিককে ওভারটাইম দিতে হবে। যা নির্ধারিত সময়ের মজুরির দ্বিগুণ হবে।
এর আগে অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার বেসরকারি কারখানা ও সংস্থাগুলির জন্য দৈনিক কর্মঘন্টা ৯ থেকে বাড়িয়ে ১০ ঘণ্টা করেছে। রাজ্য সরকারের যুক্তি, এই সিদ্ধান্ত শিল্পে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সহায়তা করবে। বিনিয়োগ বাড়লে বাড়বে কাজের সুযোগও। এতে আখেরে কর্মচারীরাই লাভবান হবেন।
অন্ধ্র সরকারের এই সংশোধনীর বিরুদ্ধে ট্রেড ইউনিয়নগুলির পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, এই সিদ্ধান্ত শ্রমিকদের কল্যাণ ও অধিকারকে উপেক্ষা করছে এবং "দাসত্বের" দিকে ঠেলে দিচ্ছে কর্মীদের।
অন্ধ্রপ্রদেশের তথ্য ও জনসংযোগমন্ত্রী কে পার্থসারথি জানিয়েছিলেন, শ্রম আইনের পরিবর্তনের ফলে আমাদের রাজ্যে বিনিয়োগ আরও বৃদ্ধি পাবে। কারাখানাগুলিতেও বিনিয়োগ হবে। এতে লাভবান হবেন শ্রমিকরাই। অন্ধ্রপ্রদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আইনের সংশোধন প্রয়োজন ছিল।
যদিও টিডিপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের শ্রম আইন সংশোধন নিয়ে আপত্তি জানান বিরোধীরা। বিরোধীদের অভিযোগ, এই আইনের ফলে শ্রমিকদের উপর চাপ আরও বাড়বে। শ্রমিকদের স্বার্থ বিরোধী এমন আইন বাতিল করা উচিত।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন