
এটা হিন্দুস্তান, সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ইচ্ছা অনুযায়ী এখানে আইন তৈরি হবে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সভায় দাঁড়িয়ে এমনই বিতর্কিত মন্তব্য করলেন এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি শেখর কুমার যাদব। এই মন্তব্যের পরই বিভিন্ন মহলে সমালোচিত হচ্ছেন তিনি।
ঘটনাটি ঘটেছে প্রয়াগরাজে। আদালত চত্বরেই বিশ্ব হিন্দু পরিষদ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি (UCC) নিয়ে বক্তব্য রাখার সময় বিতর্কিত মন্তব্য করেন ওই বিচারপতি। তিনি বলেন, 'এটাই আইন... আইন আসলে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতে কাজ করে। এটাকে পরিবার বা সমাজের প্রেক্ষাপটে দেখুন। সংখ্যাগরিষ্ঠের কল্যাণ ও সুখের জন্য যেটা সুবিধা হবে সেটাই মানা হবে'।
ওই অনুষ্ঠানে নাম না করেই সংখ্যালঘু মুসলিমদের কটাক্ষ করেছেন বিচারপতি শেখর কুমার যাদব। তিনি বলেন, 'আমাদের দেশে, আমাদের শেখানো হয় ক্ষুদ্রতম প্রাণীরও ক্ষতি না করতে। পিঁপড়েকে মারতে না - এই শিক্ষা আমাদের মধ্যে গেঁথে আছে। সম্ভবত সে কারণেই আমরা সহনশীল ও সহানুভূতিশীল। অন্যরা কষ্ট পেলে আমরা ব্যথা অনুভব করি। কিন্তু আপনার সংস্কৃতিতে ছোটবেলা থেকেই শিশুরা পশু জবাইয়ের মুখোমুখি হয়। এরপরেও আপনি কিভাবে আশা করছেন যে তারা সহনশীল এবং সহানুভূতিশীল হবে?'
এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি বলেন, 'একাধিক স্ত্রী রাখা, তিন তালাক এবং হালালের মতো ধারণাগুলি অগ্রহণযোগ্য। আপনি চারটি স্ত্রী রাখার অধিকার, হালাল বা তিন তালাক দাবি করতে পারেন না'।
প্রসঙ্গত, এই প্রথম নয়, আগেও বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন বিচারপতি শেখর কুমার যাদব। তিনি বলেছিলেন, "বেদ, মহাভারতের মতো ভারতের প্রাচীন গ্রন্থ, যা ভারতীয় সংস্কৃতিকে সংজ্ঞায়িত করে এবং যার জন্য ভারত পরিচিত, সেখানে গোরুকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছে। পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে গোরুকে জাতীয় পশু ঘোষণা করা উচিত এবং গো-রক্ষা হিন্দু সম্প্রদায়ের মৌলিক অধিকারের অংশ হওয়া উচিত। কারণ আমরা জানি যখন একটি দেশের সংস্কৃতি এবং বিশ্বাসে আঘাত লাগে, তখন দেশ দুর্বল হয়ে পড়ে। গোরুর ভালো হলে দেশের ভালো হবে।"
যারা গো-হত্যা করবে, তাদের কঠোরতম শাস্তি দেওয়ার জন্য সংসদে আইন আনা উচিত বলে এক মামলার শুনানিতে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। তিনি দাবি করেছিলেন, বিজ্ঞানীরা নাকি বিশ্বাস করেন, গোরুই একমাত্র প্রাণী যে অক্সিজেন গ্রহণ করে এবং নির্গমন করে।
২০২১ সালে আর এক মামলার শুনানিতে তিনি দাবি করেছিলেন, সংসদে আইন তৈরি করে হিন্দু ভগবান রাম, কৃষ্ণকে জাতীয় সম্মান দেওয়া উচিত। এঁরা শুধু হিন্দু সমাজের জন্য নয়, এঁরা বিশ্বের কল্যাণের জন্য কাজ করেছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন