
রাজস্থানের কোটা শহরে একের পর এক পড়ুয়া আত্মহত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ও আর মহাদেবনের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা করে বলেন, "এই ঘটনা অত্যন্ত গুরুতর, আপনারা (সরকার) কী করছেন?"
শুক্রবার বেঞ্চ জানায়, চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত কোটা শহরে অন্তত ১৪ জন পড়ুয়ার আত্মহত্যার ঘটনা সামনে এসেছে। সরকার পক্ষের আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বিচারপতি পারদিওয়ালা প্রশ্ন করেন, "এই শিশুরা কেন আত্মহত্যা করছে? শুধু কোটা শহরেই কেন এমন ঘটছে? আপনারা কি রাজ্য হিসেবে একবারও ভাবছেন না?" আইনজীবী জানান, আত্মহত্যার ঘটনাগুলি খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার একটি বিশেষ তদন্ত দল (SIT) গঠন করেছে।
বিচারপতিরা প্রশ্ন তোলেন, “এই ১৪ জন পড়ুয়া কেন আত্মহত্যা করল? আমরা চুপ থাকতে পারি না। আমাদের নির্দেশ না মেনে আদালত অবমাননা করছেন।” সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, কোটা মামলায় সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে ১৪ জুলাই আদালতে হাজির হয়ে তাঁর ব্যর্থতার কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে।
প্রসঙ্গত, আইআইটি খড়গপুরে অধ্যয়নরত ২২ বছর বয়সী এক ছাত্রের আত্মহত্যার মামলার শুনানির সময় দুই বিচারপতির বেঞ্চ এই পর্যবেক্ষণ করেন। গত ৪ মে ছাত্রটিকে তার হোস্টেলের ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। বেঞ্চ আরও একটি পৃথক মামলার প্রসঙ্গ তোলে, যেখানে NEET পরীক্ষার্থী এক ছাত্রী কোটা শহরে পরিবারের সঙ্গে থাকার সময় আত্মহত্যা করেন।
সুপ্রিম কোর্ট জানতে পারে, আইআইটি খড়গপুরের ঘটনায় চার দিন দেরিতে এফআইআর দায়ের করা হয়, যা নিয়ে বেঞ্চ তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে। পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রশ্ন করা হয়, "এফআইআর দায়ের করতে চার দিন কেন লাগলো?"
বেঞ্চ আরও জানায়, ২৪ মার্চের একটি গুরুত্বপূর্ণ রায়ে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে আত্মহত্যার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে জাতীয় টাস্ক ফোর্স গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই রায়ের প্রেক্ষিতে এমন ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল বলেও মন্তব্য করে আদালত।
(এখানে আত্মহত্যা প্রতিরোধ হেল্পলাইন নম্বর দেওয়া আছে। আপনি বা আপনার পরিচিত কারোর সহায়তার প্রয়োজন হলে অনুগ্রহ করে যোগাযোগ করুন। সর্বভারতীয় হেল্পলাইন নম্বর - ০২২-২৭৫৪৬৬৬৯)
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন