
কর্ণাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বরের বিরুদ্ধে ওঠা সোনা পাচার মামলায় নয়া মোড়। রাজ্যের উপ মুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমারের দাবি, অভিনেত্রী রান্যা রাওয়ের বিয়ের উপহার দিয়েছিলেন পরমেশ্বর। আর এতে কোনও ভুল নেই।
সোনা পাচার কাণ্ডে কন্নড় অভিনেত্রী রান্যা রাওকে গ্রেফতারের পর এই মামলায় নাম জড়ায় কর্ণাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। এই বিষয়টির তদন্ত করছে ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্ট থেকে ৪০ লক্ষ টাকা ব্যবহার করা হয়েছে রান্যা রাওয়ের ক্রেডিট কার্ডের বিল শোধ করার জন্য। মন্ত্রীর তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তদন্তও চালিয়েছে ইডি। গত পাঁচ বছরের আর্থিক রেকর্ড খতিয়ে দেখা হয়। যদিও মন্ত্রীর দাবি, তিনি সমস্তটাই সহযোগিতা করছেন।
এই নিয়ে বিতর্কের মাঝে জি পরমেশ্বরের বাসভবনে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যান শিবকুমার। সেখান থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, "আমি পরমেশ্বরের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা জনগণের সেবার জন্য আছি, প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করি। মানুষকে আমাদের অনেক উপহার দিতে হয়। ১ টাকা, ১০ টাকা থেকে শুরু করে ১০ লক্ষ টাকা, ৫ লক্ষ টাকা উপহার দিই। আমার মনে হয় তিনিও হয়তো উপহার দিয়েছিলেন। এটি একটি বিয়ে ছিল, আর সেখানে উপহার দেওয়াতে কোনও ভুল নেই"।
শিবকুমার আরও জানান, রান্যা রাও যে ধরণের কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত, তা কোনও রাজনীতিবিদ সমর্থন করবেন না। তিনি বলেন, "মহিলা যা করেছেন, তা সম্পূর্ণ তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপারে। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলে এর বিচার করবে। আমরা হাজার হাজার মানুষের সাথে দেখা করি, আমরা জানি না কে কী করে। আমরা আইন এবং ইডির কাজে হস্তক্ষেপ করতে চাই না। আমি তাঁকে এর ব্যাপারে (উপহারের বিষয়ে) জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানিয়েছেন, বিয়েতে তিনি উপহার দিয়েছিলেন"।
উল্লেখ্য, গত ৩ মার্চ বেঙ্গালুরু বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয় রান্যাকে। অভিযোগ, দুবাই থেকে অভিনেত্রী সোনা পাচার করছিলেন। বিমানবন্দর থেকে বেরোনোর আগে তল্লাশি চালিয়ে অভিনেত্রীর কাছ থেকে ১৪ কেজির সোনার বিস্কুট উদ্ধার করেন গোয়েন্দারা। যার বাজারমূল্য সাড়ে ১২ কোটি টাকা। পরে অভিনেত্রীর বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। সেখান থেকে দু’কোটি টাকার সোনার গয়না এবং আড়াই কোটির বেশি নগদ পাওয়া যায়। এর সপক্ষে কোনও যথাযথ রসিদ দেখাতে পারেন নি অভিনেত্রী। সোনাপাচার মামলায় ডিআরআই-এর আবেদনের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে সিবিআই। পরে এই একই মামলায় তদন্ত শুরু করে ইডিও।
যদিও এই মামলায় গত ২০ মে জামিন পান অভিনেত্রী। অর্থনৈতিক অপরাধ সংক্রান্ত বিশেষ আদালত শর্তসাপেক্ষে অভিনেত্রীর জামিন মঞ্জুর করেছে। তবে জামিন পেলেও জেলমুক্তি হয়নি অভিনেত্রীর। তাঁর বিরুদ্ধে বৈদেশিক মুদ্রা সংরক্ষণ এবং চোরাচালান কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনের ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। এর জেরে জেলেই থাকতে হবে তাঁকে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন