
ফেব্রুয়ারির শুরুতেই দিল্লি বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে বিজেপি প্রার্থী রমেশ বিধুরিকে নিয়ে অস্বস্তিতে দল। প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা এবং অতিশীকে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করেছিলেন তিনি। সূত্রের খবর, মহিলা ভোটের কথা মাথায় রেখে রমেশ বিধুরিকে কালকাজি আসন থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে বিজেপি। মহিলাদের সম্পর্কে অসম্মানজনক মন্তব্য কোনও ভাবেই বরদাস্ত করবে না দল, বিধানসভা নির্বাচনের আগে এমনই বার্তা দিতে চাইছে পদ্ম শিবির।
চলতি বিধানসভা নির্বাচনে রাজধানীতে আপ-কংগ্রেস-বিজেপি ত্রিমুখী লড়াই হতে চলেছে। দিল্লির কালকাজি কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী করেছে বিতর্কিত ব্যক্তি রমেশ বিধুরিকে। নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে কেরালার ওয়াইনাডের কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে আক্রমণ করে বিধুরি বলেন, ‘কালকাজিতে জিতলে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরার গালের মতো মসৃণ রাস্তা করে দেবেন’।
যদিও এই মন্তব্যকে গুরুত্ব দিতে চাননি প্রিয়াঙ্কা। তিনি বলেন, ‘এটা অত্যন্ত হাস্যকর মন্তব্য। উনি নিজের গাল নিয়ে কখনও কিছু বলেননি। এ সব অপ্রাসঙ্গিক কথা। দিল্লিতে ভোট হচ্ছে, আমাদের উচিত মানুষের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি নিয়ে কথা বলা’।
এই বিতর্কের মধ্যে ফের তাঁরই কেন্দ্রের আপ প্রার্থী তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে অতিশীকে আক্রমণ করেন রমেশ বিধুরি। অতিশীর পদবি পদত্যাগ করাকে কটাক্ষ করে বিধুরি বলেন, ‘অতিশী নিজের বাপ বদলে ফেলেছে’। উল্লেখ্য, অতীতে অতিশী নিজের নামের শেষে মারলেনা পদবি ব্যবহার করতেন। কিন্তু গত চার-পাঁচ বছর তিনি পদবি ব্যবহার করেন না। কেবল নামই ব্যবহার করেন।
বিধুরীর এই কুরুচিকর মন্তব্য নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তোলেন, বিজেপি কি এই মন্তব্য আদৌ সমর্থন করে? আপ প্রচার করছে, এই বিধুরিই বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী। আপ-এর এই প্রচারে আরও অস্বস্তিতে পড়ে বিজেপি। ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমে সমাজমাধ্যমে ক্ষমা চান বিধুরি নিজে। কিন্তু বিধুরির বিরুদ্ধে দলের একাংশের মনে ক্ষোভ জমেছে। তাঁকে কালকাজি আসন থেকে সরিয়ে দেওয়া উচিত কিনা, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই দু’টি বৈঠক করেছে বিজেপি। সূত্রের খবর, বিধুরিকে সরানোর পক্ষে রয়েছেন দিল্লি ভোটের দায়িত্বে থাকা জয় পান্ডা। পাণ্ডাকে সমর্থন করেছেন দিল্লির অনেক বিজেপি নেতাই। এমনকি বিধুরির টিকিট বাতিল করে দেওয়ার পক্ষেও রয়েছে দলের একটি বড় অংশ।
দিল্লির কালকাজিতে মূলত বসবাস করেন পাঞ্জাবি ও বাঙালিরা। কালকাজির মত উচ্চবিত্ত এলাকায় গুর্জ্জর সমাজের নেতা বিধুরির তেমন কোনও জনভিত্তি নেই। তাই সেখানে অতিশীর মতো শিক্ষিত নেত্রীর জয়ের সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। এই পরিস্থিতিতে ওই এলাকায় বিধুরিকে বাদ দিয়ে এলাকার প্রাক্তন সাংসদ মীনাক্ষী লেখি, দিল্লি বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি যোগিতা সিংয়ের মতো শিক্ষিত মহিলাদের দাঁড় করানোর কথা ভাবছে দল। পরিবর্তে তুঘলাবাদ এলাকার কোনও কেন্দ্রে বিধুরিকে সরানো হতে পারে বলে আলোচনা চলছে। আবার বিজেপির একটা অংশের মতে, নাম ঘোষণার পরে বিধুরিকে সরানো হলে ভুল বার্তা যাবে দল ও সমর্থকদের কাছে। অর্থাৎ বিধুরিকে নিয়ে বিজেপির শাঁখের করাতের দশা। এখন দেখার দলের শীর্ষ নেতৃত্ব কী সিদ্ধান্ত নেয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন