
কাগজে কলমে অবসর নেওয়ার কথা ৯ জুন। কিন্তু ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে একমাস আগেই অবসর নিলেন সুপ্রিম কোর্টের দশম মহিলা বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদী। শুক্রবার শেষবারের মতো দপ্তরে এসেছিলেন তিনি। রীতি মেনে এদিন প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাইয়ের সঙ্গে সেরিমনিয়াল বেঞ্চে বসেছিলেন তিনি। কিন্তু বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদীর বিদায় সংবর্ধনা বয়কট করল সুপ্রিম কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশন। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতি। তাঁর বক্তব্য, এমনটা কোনও ভাবেই বাঞ্ছিত ছিল না।
চার বছর ধরে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির দায়িত্ব সামলাচ্ছেন বেলা এম ত্রিবেদী। শুক্রবার নিয়ম মাফিক তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিদায় সংবর্ধনা দেওয়ার বিষয়ে সায় দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন। অভিযোগ, বেলা ত্রিবেদী বিচারপতির আসনে বসে একাধিক আইনজীবীকে নিশানা করেছেন। সম্প্রতি এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত হয়ে বিচারপতি ত্রিবেদী তাঁকে এজলাসে কার্যত অপদস্থ করেছিলেন বলে অভিযোগ।
এমনকি গত বছর একটি মামলায় এক আইনজীবীকে সাক্ষ্যগোপন করার অভিযোগে তিনি সাজাও দেন। বারবার ক্ষমাপ্রার্থনা করেও মেলেনি রেহাই। এছাড়া ক’মাস আগে অভিযুক্ত এক মহিলা মেডিক্যাল গ্রাউন্ডে জামিনের আর্জি জানালে তা খারিজ করে তাঁর স্থূলতা নিয়ে মন্তব্য করেন বিচারপতি। সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদে স্বীকৃত জীবনের অধিকার রক্ষার যুক্তিতে জামিন চাওয়া যাবে না বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। এমনকি হার্টে বাইপাস হওয়া এক বন্দি জামিন চাইলে, সেটাকে অ্যাপেন্ডিক্স অপারেশনের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
নরেন্দ্র মোদী গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন আইনসচিব ছিলেন বেলা। তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপিপন্থী মনোভাবের অভিযোগ উঠেছে বহুবার। বহু স্পর্শকাতর মামলা নিজের এজলাসে স্থানান্তরিত করা নিয়ে গুঞ্জন ছড়িয়েছে বহু বার। কয়েক মাস আগেই জামিন–আর্জির মামলা (উমর খালিদ–সহ বেশ কয়েক জনের) ত্রিবেদীর বেঞ্চ থেকে প্রত্যাহারের হিড়িক পড়ে গিয়েছিল।
তবে শুক্রবার অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কপিল সিব্বাল এবং সহ-সভাপতি রচনা শ্রীবাস্তব। তাঁদের সৌজন্যবোধের জন্য ব্যক্তিগতভাবে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি গাভাই। বিচারপতি ত্রিবেদীকে অত্যন্ত নিরপেক্ষ এবং ভালো একজন বিচারপতি হিসাবেও উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন