
* গুলমার্গ, পহেলগাঁও এবং সোনমার্গে মরশুমের প্রথম তুষারপাত। তাপমাত্রা নেমেছে অনেকটাই। স্বাভাবিকের চেয়ে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম।
* শ্রীনগরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শ্রীনগর-লেহ এবং মুঘল রোড সহ প্রধান মহাসড়কগুলি তুষারপাতের কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে।
* নিরাপত্তার জন্য বৈষ্ণোদেবী যাত্রা ৮ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে।
ক্যালেন্ডারের হিসাবে শীত এখনও আসেনি কাশ্মীরে। কিন্তু প্রকৃতি যেন তার ঘড়ি এগিয়ে দিয়েছে। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহেই গুলমার্গ, সোনমার্গ ও আশপাশের পার্বত্য অঞ্চল মুখ ঢেকেছে অকাল তুষারপাতে। যার ফলে তাপমাত্রা কমেছে কয়েক ডিগ্রি।
গুলমার্গ, সোনমার্গসহ উত্তর কাশ্মীরের বিস্তীর্ণ এলাকায় মঙ্গলবার অকাল তুষারপাত শুরু হয়। পর্যটনকেন্দ্রগুলি কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ঢেকে যায় বরফে। শ্রীনগরেও হিমেল হাওয়া বইতে শুরু করে। ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সমতলে হঠাৎ তাপমাত্রা কমে যায়। মৌসম ভবন জানিয়েছে, গুলমার্গে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল মাত্র ৪.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শ্রীনগরে ছিল ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের তুলনায় ১৩ ডিগ্রি কম।
ভারী বৃষ্টিপাত এবং তুষারপাতের কারণে জম্মু ও কাশ্মীরের বেশিরভাগ প্রধান সড়ক ও মহাসড়ক বন্ধ রয়েছে। শ্রীনগর-জম্মু জাতীয় মহাসড়ক বেশ কয়েকটি স্থানে ভূমিধসের কারণে বন্ধ রয়েছে। এর জেরে সড়কটি তিন সপ্তাহের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ওই মহাসড়কে আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে ভারী বৃষ্টিপাত এবং মেঘ ভাঙা বৃষ্টির ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
অন্যদিকে, সোনমার্গ ও জোজিলা পাসে তুষারপাতের কারণে বন্ধ করা হয়েছে শ্রীনগর–লাদাখ সড়ক। পাশাপাশি, মুঘল রোড ও সিন্থান টপ (কিশ্তওয়ার–অনন্তনাগ রোড) বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর ফলে উপত্যকার উত্তর ও দক্ষিণ প্রান্তের যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, রাস্তা পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়েছে, কিন্তু ক্রমাগত বৃষ্টি ও তুষারপাতের কারণে তা বিলম্বিত হচ্ছে।
তুষারপাতের সময় কাশ্মীরের কৃষকদের জন্য বছরের সবচেয়ে ব্যস্ত মরশুম। আপেল ও অন্যান্য ফলের ফসল তোলার কাজ তখন প্রায় শেষ পর্যায়ে থাকে। কিন্তু এবারের অকাল তুষারপাত ফলে কৃষকদের নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
অক্টোবরের শুরুতেই এমন ঠান্ডা আবহাওয়ার জন্য কাশ্মীরবাসী একেবারেই প্রস্তুত ছিলেন না। ঘরে ঘরে ফের চালু হয়েছে হিটার, কাঠের ‘বুখারি’ ও কম্বলের ব্যবহার। স্কুল ও অফিসে উপস্থিতিও কমেছে। স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা।
প্রবল বৃষ্টির জেরে বিপর্যস্ত হয়েছে জম্মুর মাতা বৈষ্ণোদেবী যাত্রা। আবহাওয়ার সতর্কতা মাথায় রেখে প্রশাসন তিন দিনের জন্য যাত্রা বন্ধ ঘোষণা করেছে। এর আগে ২৬ আগস্ট এক ভয়াবহ ভূমিধসে ৩৫ জন তীর্থযাত্রীর মৃত্যু হয়েছিল। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছিলেন, তখনও বোর্ড যথাসময়ে যাত্রা বন্ধ করেনি। তাই এবার কোনও ঝুঁকি নিতে চায়নি প্রশাসন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন