পুরো হিমাচল প্রদেশ (Himachal Pradesh) জুড়ে প্রবল বৃষ্টির কারণে বন্ধ করে দেওয়া হল ট্রেন চলাচল। বন্ধ রাখা হয়েছে ১৩১১টি রাস্তা, যার মধ্যে ৬টি জাতীয় সড়কও (National Highway) আছে। বন্ধ আছে স্কুল। মঙ্গলবার দিনভর প্রবল বৃষ্টিতে হিমাচলের বহু অংশের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়েছে। আগেই সোম এবং মঙ্গলবারের জন্য রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে লাল এবং কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছিল।
যে রাস্তাগুলি বৃষ্টির কারণে আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে তার মধ্যে আছে মান্ডির ২৮৯টি রাস্তা, শিমলার ২৪১টি, চাম্বার ২৩৯টি, কুলুর ১৬৯টি এবং শিরামুর জেলার ১২৭টি রাস্তা। এছাড়াও জাতীয় সড়ক ৩ (মান্ডি ধরমপুর), জাতীয় সড়ক ৩০৫ (অট সাইঞ্জ), জাতীয় সড়ক ৫ (ওল্ড হিন্দুস্তান টিবেট), জাতীয় সড়ক ৫০৫ (খাব গ্রাম্ফু), জাতীয় সড়ক ৭০৭ (হাটকোটি পোয়ান্টা) বন্ধ রাখা হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যে থেকে সবথেকে বেশি বৃষ্টি হয়েছে নয়না দেবীতে। এখানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৯৮.২ মিমি। রোহরুতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৮০ মিমি, জোত-ে ৬১.২ মিমি, বাগগিতে ৫৮.৫ মিমি, কুকুমসেরিতে ৫৫.২ মিমি, নাদাউনে ৫৩মিমি, অলিন্ডাতে ৫০ মিমি, নানগাল ড্যামে ৪৯.৮ মিমি, উনাতে ৪৯ মিমি, ভুন্টারে ৪৭.৭ মিমি, সারাহানে ৪৭.৫ মিমি, বাঞ্জারে ৪২মিমি এবং বিলাসপুরে ৪০.২ মিমি।
প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে ট্রেন চলাচল। রাজ্য প্রশাসনের সূত্র অনুসারে, প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে শহরাঞ্চলের চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে প্রত্যন্ত অঞ্চলে। বিভিন্ন জায়গায় সংযোগকারী রাস্তাগুলি সব বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে আপেল চাষিরা তাদের উৎপাদিত পণ্য কোথাও পাঠাতে পারছেন না।
এখনও পর্যন্ত হিমাচল প্রদেশে বর্ষার শুরু থেকে প্রবল বৃষ্টিপাত, হড়পা বান ও বৃষ্টিজনিত পথ দুর্ঘটনায় কারণে ৩২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ ৪১ জন। গত ২০ জুন বর্ষার শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত হিমাচল প্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ৯৫টি হড়পা বান (Flash Flood), ৪৫টি মেঘভাঙা বৃষ্টি (Cloud Burst) এবং ১১৫টি ধসের (Landslide) ঘটনা ঘটেছে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে চলতি বছরের বর্ষায় রাজ্যের ক্ষতি হয়েছে ৩,১৫৮ কোটি টাকা।
শুধুমাত্র সোমবারের ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে রাজ্যের ৩,২৬৩টি বিদ্যুৎ ট্রান্সফর্মার এবং ৮৫৮টি জল সরবরাহ কেন্দ্র বিপর্যস্ত হয়েছে।
জানা গেছে শিমলা, কাংরা, সিরামোউর, উনা, বিলাসপুর, চাম্বা, হামিরপুর, লাহুল এবং স্পিতি ও সোলান জেলার সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মঙ্গলবার বন্ধ রাখা হয়েছিল। অন্যদিকে প্রবল প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যে মনিমহেশ যাওয়ার পথে প্রায় ৫ হাজার তীর্থযাত্রী আটকে পড়েছেন চাম্বাতে। তাদের উদ্ধার করে ফেরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। গত ১৫ আগস্ট যাত্রা শুরুর পর থেকে এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন ঘটনায় ১৬জন তীর্থযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন