
মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা শিবসেনা প্রধান একনাথ শিন্ডেকে 'গদ্দার' বলার অভিযোগে রোষের মুখে পড়লেন কৌতুক শিল্পী কুণাল কামরা। তাঁর এই মন্তব্যের জন্য মুম্বাইয়ের যে হোটেলে তিনি অনুষ্ঠান করেছিলেন সেটিতে ভাঙচুর চালিয়েছেন শিবসেনার কর্মী সমর্থকেরা। এছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে এফআইআর। পাশাপাশি মহারাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকেও সর্বসমক্ষে কুণালকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, 'নয়া ভারত' নামক একটি অনুষ্ঠানে বর্তমান ভারতের রাজনৈতিক অবস্থা নিয়ে বিদ্রুপের ছলে কিছু মন্তব্য করেছেন কুণাল। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, শিন্ডের নাম না করেই জনপ্রিয় একটি হিন্দি গানের নকল করে তাঁর অঙ্গভঙ্গি এবং শারীরিক গঠন বর্ণনা করছেন তিনি। এমনকি এক জায়গায় শিন্ডেকে 'গদ্দার' বলেও উল্লেখ করেন তিনি। আর সেই ভিডিও সামনে আসার পর থেকেই কুণালের বিরুদ্ধে সরব হন শিবসেনার সমর্থকেরা।
প্রায় একমাস আগে রেকর্ড হওয়া ওই ভিডিওতে কুণাল কামরার মন্তব্যের প্রতিবাদে শিবসেনা কর্মীরা, রবিবার মুম্বাইয়ের হ্যাবিট্যাট স্টুডিওতে ভাঙচুর চালায়। এই স্টুডিওতেই রেকর্ড হয়েছে ভিডিওটি। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, কর্মী সমর্থকেরা স্টুডিওর চেয়ার, ক্যামেরা, লাইট, স্পিকার নষ্ট করে দিয়েছে। শিবসেনার অভিযোগ, একনাথ শিন্ডের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই এই কাজ করেছেন কুণাল। তাদের আরও অভিযোগ, টাকার বিনিময় কৌতুকশিল্পী এই কাজ করেছেন।
ইতিমধ্যেই কুণালের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন শিবসেনা বিধায়ক মুরজি পটেল। এছাড়া, অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে শিবসেনা (ইউবিটি) দলের প্রধান উদ্ধব ঠাকরে, সঞ্জয় রাউত এবং কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধেও।
অন্যদিকে, সোমবার সকালে শিবসেনা নেতা সঞ্জয় নিরুপম কুণাল কামরাকে মারধর করার হুমকি দিয়েছেন। এমনকি কুণাল যাতে দেশের কোথাও স্বাধীনভাবে যাতায়াত করতেন না পারেন তা সুনিশ্চিত করবেন বলে হুমকির সুরে জানিয়েছেন শিবসেনার সাংসদ নরেশ মাসকে।
অন্যদিকে, কুণালের এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছে মহারাষ্ট্র সরকার। শিন্ডের পাশে দাঁড়িয়ে কুণালকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি তুলেছেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ। তিনি বলেন, "এমন নিম্নস্তরের কৌতুকশিল্পীর রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রীকে অসম্মান করা ঠিক নয়। এর মধ্যে কোনও হাস্যরস নেই। নেতাদের অপমান করা সহ্য করা হবে না। আইনি পদক্ষেপ করা হবে।” পাশাপাশি, শিন্ডেকে 'গদ্দার' মন্তব্যের পাল্টা ফড়নবিশ জানিয়েছেন, "মহারাষ্ট্রের মানুষ ২০২৪ বিধানসভা নির্বাচনে দেখিয়ে দিয়েছে কে আসল গদ্দার। জনগণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাল ঠাকরের প্রকৃত উত্তরাধিকার আসলে কে।"
এদিকে এই বিতর্কের মধ্যে সংবিধান ধরে একটি ছবি সমাজ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন কুণাল। সেখানে তিনি মন্তব্য করেছেন, 'সামনে এগোনোর একমাত্র পথ'।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন