
আর্থিক জালিয়াতি এবং সেবির নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়ার (SEBI) প্রাক্তন প্রধান মাধবী পুরী বুচ-এর বিরুদ্ধে এফআইআর জারি করার নির্দেশ দিল মুম্বাইয়ের এক স্পেশাল অ্যান্টি করাপশন ব্যুরো (ACB) কোর্ট। একইসঙ্গে সেবির বর্তমান তিন সর্বসময়ের ডিরেক্টর এবং বিএসই-র দুই আধিকারিকের বিরুদ্ধেও এফআইআর জারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ১৯৯৪ সালে বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে এক সংস্থার তালিকাভুক্তির সময় এই অনিয়ম হয়েছিল বলে অভিযোগ।
মাধবী পুরী বুচ ছাড়াও অন্য যাদের বিরুদ্ধে আর্থিক জালিয়াতির অভিযোগে এফআইআর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে আছেন অশ্বিনী ভাটিয়া, অনন্ত নারায়ণ জি এবং কমলেশ চন্দ্র ভার্সনে। এছাড়াও বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের দুই আধিকারিক হলেন প্রমোদ আগরওয়াল এবং সুন্দররামন রামামূর্তি। এই নির্দেশ দিয়েছেন স্পেশাল জাজ শশীকান্ত একনাথরাও বাঙ্গার।
বার এন্ড বেঞ্চ-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুসারে, আগামী ৩০ দিনের মধ্যে এই বিষয়ে তদন্ত সংক্রান্ত স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দেবার কথা। আদালত জানিয়েছে, তারা এই তদন্তে নজর রাখবে। ডোমবিভালির এক সাংবাদিক স্বপন শ্রীবাস্তব-এর করা অভিযোগের ভিত্তিতে এই তদন্ত চলছে।
শনিবার ১ ফেব্রুয়ারি আদালতের এই নির্দেশের পর রবিবার সেবি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, স্পেশাল কোর্টের এই নির্দেশ হাতে পাবার পর তাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে আইনি পরামর্শ নেওয়া হবে। সেবি আরও জানিয়েছে, ঘটনার সময় এই আধিকারিকরা ওই সমস্ত পদে না থাকা সত্ত্বেও আদালত কোনও নোটিশ না দিয়েই এবং সেবিকে কোনও তথ্য পেশের সুযোগ না দিয়েই এই নির্দেশ দিয়েছে।
এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে মাধবী পুরী বুচ-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন কংগ্রেস নেতা পবন খেরা। তাঁর অভিযোগ ছিল, মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রার থেকে প্রায় ৬ কোটি টাকা পেয়েছেন সেবির চেয়ারম্যানের স্বামী। বিনিময়ে পাঁচটি তদন্তে মাহিন্দ্রা সংস্থার পক্ষে রায় দিয়েছে শেয়ার বাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবি।
পবন খেরা আরও বলেন, ২০১৯ থেকে ২০২১’র মধ্যে ধবল বুচকে বিপুল অঙ্কের টাকা দিয়েছে মাহিন্দ্রা গোষ্ঠী। ২০১৯-২০ পর্বে ধবল বুচকে দেওয়া হয়েছে ১ কোটি ৭৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা এবং ২০২০-২১ পর্বে দেওয়া হয় ৪ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা। যে সময় মাধবী পুরী বুচ ‘সেবি’র পূর্ণ সময়ের সদস্য ছিলেন।
মূলত আমেরিকা-ভিত্তিক শর্ট-সেলার হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ তাদের এক রিপোর্টে জানায় মাধবী পুরী বুচ এবং তার স্বামীর দুটি পরামর্শদাতা সংস্থা সিঙ্গাপুর-ভিত্তিক অ্যাগোরা পার্টনার্স এবং ভারত-ভিত্তিক অ্যাগোরা অ্যাডভাইজরি পরিচালনা করেন। হিন্ডেনবার্গের মতে, সেবিতে শীর্ষ ভূমিকা নেওয়ার ঠিক আগে বুচ ২০২২ সালের মার্চ মাসে আগোরা পার্টনারসে তাঁর শেয়ারগুলি স্বামীর কাছে হস্তান্তর করেন। এর পরেই কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানানো হয়।
এর আগে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মাধবী পুরী বুচ এবং তাঁর স্বামী ধবল বুচ। এই অভিযোগ প্রসঙ্গে মাহিন্দ্রার পক্ষ থেকে জানানো হয় ধবল বুচ তাদের সংস্থার পরামর্শদাতা এবং সেই হিসেবেই তাঁকে পরামর্শ দেবার জন্য টাকা দেওয়া হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন