
দিল্লি পুর নিগমের সাফাই কর্মী এবং সরকারি স্কুল শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভায় যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছে। এজন্য সাফাই কর্মী ও সরকারি কর্মীদের রবিবারের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সভায় যোগ না দিলে চাকরি থেকে ছাঁটাইয়েরও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি বিজেপির বিরুদ্ধে এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলেছে আম আদমি পার্টি। এই পদক্ষেপকে 'শিক্ষক পেশার অপমান' এবং 'সরকারি কর্মীদের উপর জোর খাটানো' বলে অভিহিত করেছে আপ। যদিও দিল্লি পুরসভার পক্ষ থেকে আপের এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
রবিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রোহিণীতে দারকা এক্সপ্রেস এবং নগর সম্প্রসারণ সড়ক-II (UER-II) এর উদ্বোধন করেন। প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা মূল্যের প্রকল্প উদ্বোধনের পর পাশেই একটি জনসভায় ভাষণ দেন তিনি। আপের দিল্লির রাজ্য সভাপতি সৌরভ ভরদ্বাজ দাবি করেন, এনসিডি শিক্ষক, ম্যালেরিয়া বিভাগের কর্মী, লাইসেন্স কর্মকর্তা এবং স্যানিটেশন কর্মীদের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছিল। তিনি বলেন, "বিজেপি কর্মীদের অভাব পূরণের জন্য, এমসিডি এবং অন্যান্য বিভাগের কর্মীদের চাপ দিয়ে সমাবেশস্থলে পাঠানো হয়েছে।"
এমনকি অভিযোগের স্বপক্ষে সোশ্যাল মিডিয়ায় কয়েকটি ভিডিও শেয়ার করেছে আপ। একটি ভিডিওতে এক ব্যক্তিকে অভিযোগ করতে শোনা যায়, তুঘলকি নির্দেশ জারি করে তাঁদের বলা হয়েছে যাঁরা সভায় যাবেন না তাঁদের দিল্লি পুর নিগমের তরফে ছাঁটাই করা হবে, অথবা সাসপেন্ড করা হবে। তাঁর কথায়, "পুর নিগমে সাফাইকর্মীদের সঙ্গে আজ এই ধরনের হুঁশিয়ারি ও গুণ্ডাগিরি করছে দিল্লির বিজেপি সরকার।"
আরেকটি ভিডিওতে একজন স্যানিটেশন কর্মীকে বর্ণনা করতে দেখা গেছে যে ব্যক্তিগত পারিবারিক প্রতিশ্রুতি থাকা সত্ত্বেও কীভাবে তাঁকে উপস্থিত থাকতে বাধ্য করা হয়েছে এই অনুষ্ঠানে। তিনি দাবি করেন যে, কর্মীদের "চাপের মধ্যে বসিয়ে রাখা হয়েছিল" এবং আদেশ অমান্য করার বিরুদ্ধে সতর্ক করা হয় (সেই সমস্ত ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি পিপলস রিপোর্টার)।
এপ্রসঙ্গে দিল্লির বিরোধী দলনেতা অতিশী বলেন, "কর্তব্যের নামে হুমকি দেওয়া এবং সমাবেশে টেনে আনা ভুল। সাফাই কর্মীদের দায়িত্ব শহর পরিষ্কার রাখা, সমাবেশে ভিড় বাড়ানো নয়। তাদের জোর করে এনে বিজেপি তুচ্ছ রাজনীতি করছে।"
এক সাংবাদিক বৈঠকে এ প্রসঙ্গে আপ নেতা মণীশ সিসোদিয়া দাবি করেন, "সরকারি নির্দেশে দিল্লিতে শিক্ষকদের মোদিজির সমাবেশে হাততালি দিতে পাঠানো হয়েছে। এটা বিজেপির শিক্ষকদের প্রতি চরম অপমান। শিক্ষকরা দেশ-নির্মাতা, সমাবেশে যোগ দেওয়ার তাঁদের কাজ নয়।" তিনি বিজেপির দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে পূর্বতন AAP সরকারের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য ফিনল্যান্ড এবং কেমব্রিজে পাঠানোর রেকর্ডের তুলনা করে অভিযোগ করেন যে, ক্ষমতাসীন দল "তাঁদের কেবল হাততালি দেওয়ার" জন্য রেখেছে।
যদিও এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এমসিডির মেয়র রাজা ইকবাল সিং। তিনি বলেন, "সমস্ত ভিত্তিহীন দাবি। এমসিডির কর্মীরাও দিল্লির নাগরিক। তাঁরা সেখানে গিয়েছিলেন কারণ তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর কথা শুনতে চেয়েছিলেন। ক্ষমতা থেকে যাওয়ার পর আপ এখন বেকার। তাই অপ্রয়োজনীয়ভাবে সবকিছুকে ইস্যু করে তুলেছে!"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন