
স্বঘোষিত ধর্মগুরু আসারাম বাপুর অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন খারিজ করল রাজস্থান হাইকোর্ট। একই মামলায় গত ১৪ জানুয়ারি অন্তর্বর্তী জামিন দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। ৩১ মার্চ ফের জেলে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। এরপরে মঙ্গলবারই নতুন করে অন্তর্বর্তী জামিনের আর্জি জানানো হয়। বুধবার সেই আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত। আগামী ৭ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
জোধপুর এবং সুরাটে দু’টি পৃথক ধর্ষণ মামলায় জেল বন্দি আসারাম বাপু। দু’টি মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। জানুয়ারি মাসে দুটি মামলাতেই তিন মাসের অন্তর্বর্তী জামিন পেয়েছিলেন তিনি। জামিনে থাকাকালীনই গত সপ্তাহে সুরাট ধর্ষণকাণ্ডে তার আরও তিন মাসের অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করেছে গুজরাট হাইকোর্ট। কিন্তু আরেকটি মামলায় জামিন না পেলে আত্মসমর্পণের পর নতুন করে তার জেলমুক্তি সম্ভব নয়।
জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর মঙ্গলবার দুপুর দেড়টা নাগাদ জোধপুর সেন্ট্রাল জেলে আত্মসমর্পণ করেন আসারাম বাপু। ১০ ঘন্টা পর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় জেলের হাসপাতালে। কিন্তু কী কারণে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তা স্পষ্ট করেনি জেল কর্তৃপক্ষ। এদিকে মঙ্গলবারই ফের অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন দায়ের করে তা জরুরী ভিত্তিতে শোনার জন্য আবেদন জানান আসারাম।
বুধবার রাজস্থান হাইকোর্টে ছিল এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি। এদিন আসারাম বাপুর জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করেন সরকার পক্ষের আইনজীবী। তিনি জানান, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও জেলের বাইরে থাকাকালীন ধর্মপ্রচার করেছেন আসারাম। ভক্তদের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং উপদেশও দিয়েছেন। যদিও এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আসারাম বাপুর আইনজীবী। এদিন আসারামের জামিনের বিরোধিতা করেছেন নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবীও।
এরপরেই আদালত আসারাম বাপুর জামিনের আবেদন খারিজ করে নির্দেশ দেয়, এই সংক্রান্ত বিষয়ে আবেদনকারীর বক্তব্য হলফনামা আকারে জমা দিতে হবে। এছাড়া অন্তর্বর্তী জামিন চলাকালীন কী ধরণের চিকিৎসা পরিষেবা গ্রহণ করেছেন, ভবিষ্যতে তার চিকিৎসার প্রয়োজন আছে কি না, সমস্তটাই লিখিত আকারে জানানোর নির্দেশ দিয়েছে রাজস্থান হাইকোর্ট।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে স্বঘোষিত ধর্মগুরু আসারাম বাপুর বিরুদ্ধে নিজেরই আশ্রমের এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ২০১৮ সালে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে রাজস্থানের জয়পুর আদালত। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় তার। এরপর ২০২২ সালে প্রথম বার রাজস্থান হাইকোর্টে জামিনের আর্জি জানান তিনি।
২০২৩ সালে উচ্চ আদালত সেই আবেদন খারিজ করলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। সে বছরই সুরাটের এক মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে আসারামের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সেপ্টেম্বরে তার জামিনের আবেদন খারিজ করে শীর্ষ আদালত। এরপর চলতি বছরের শুরুতে দুই মামলাতেই জামিন পান তিনি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন