"একদিনেই বিশ বছরের MGNREGA-কে ধ্বংস করে দিয়েছে মোদী সরকার" - G RAM G নিয়ে আক্রমণাত্মক রাহুল গান্ধী

People's Reporter: রাহুল লেখেন, “MGNREGA গ্রামীণ শ্রমিকদের দর কষাকষির ক্ষমতা দিয়েছিল। গ্রামীণ পরিকাঠামো নির্মিত ও পুনরুজ্জীবিত হয়েছিল। এই সরকার ঠিক সেই ক্ষমতাই ভেঙে দিতে চায়।“
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাহুল গান্ধী
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাহুল গান্ধীফাইল ছবি
Published on

বিরোধীদের তীব্র প্রতিবাদ সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে রাজ্যসভাতেও পাশ হয়ে গেল 'জি রাম জি' বিল, যার পোশাকি নাম ‘বিকশিত ভারত গ্যারান্টি ফর এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড লাইভলিহুড মিশন (গ্রামীণ) বিল' (VB G RAM G)। তবে এই বিলকে "রাষ্ট্রবিরোধী" এবং "গ্রামবিরোধী" বলে অভিহিত করেছেন বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী।

কংগ্রেস সাংসদ নিজের এক্স হ্যান্ডেলে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "একদিনেই বিশ বছরের এমজিএনআরইজিএ-কে ধ্বংস করে দিয়েছে মোদী সরকার। ভিবি-জি রাম জি এমজিএনআরইজিএ-র কোনো "সংস্কার" নয়। এটি আসলে অধিকার-ভিত্তিক, চাহিদা-চালিত গ্যারান্টিকে ধ্বংস করে, একটি রেশনিং-ভিত্তিক প্রকল্প চালু করার পদ্ধতি, যা দিল্লি থেকে নিয়ন্ত্রিত হবে। এটি এর নকশাগতভাবেই রাজ্য-বিরোধী এবং গ্রাম-বিরোধী।“

তিনি লেখেন, “এমজিএনআরইজিএ গ্রামীণ শ্রমিকদের দর কষাকষির ক্ষমতা দিয়েছিল। প্রকৃত বিকল্প থাকায় অভিবাসন কমেছিল, মজুরি বেড়েছিল, কাজের অবস্থার উন্নতি হয়েছিল। একই সাথে গ্রামীণ পরিকাঠামো নির্মিত ও পুনরুজ্জীবিত হয়েছিল। এই সরকার ঠিক সেই ক্ষমতাই ভেঙে দিতে চায়।“

“সংস্কারের নামে কাজের পরিমাণ সীমিত করে এবং কাজ অস্বীকার করার আরও নতুন উপায় তৈরি করে, ভিবি-জি রাম জি আসলে গ্রামীণ দরিদ্রদের হাতে থাকা একমাত্র হাতিয়ারটিকে দুর্বল করে দিচ্ছে। কোভিড মহামারীর সময় আমরা দেখেছি এমজিএনআরইজিএ-র গুরুত্ব কতটা ছিল। যখন মানুষের উপার্জন প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, তখন এটি কোটি কোটি মানুষকে ক্ষুধা ও ঋণ থেকে রক্ষা করেছিল।“

“এটি সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছিল নারীদের - বছরের পর বছর ধরে মোট কর্মদিবসের অর্ধেকের বেশিতে অবদান রয়েছে নারীদের। যখন একটি কর্মসংস্থান কর্মসূচিকে রেশনিং করা হয়, তখন প্রথমেই নারী, দলিত, আদিবাসী, ভূমিহীন শ্রমিক এবং সবচেয়ে দরিদ্র ওবিসি সম্প্রদায়কেই বাদ দেওয়া হয়“, জানান কংগ্রেস নেতা।

তিনি বলেন, “এই আইনটি যথাযথ পর্যালোচনা ছাড়াই সংসদে জোর করে পাশ করানো হয়েছে। বিলটি স্থায়ী কমিটিতে পাঠানোর বিরোধীদের দাবি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। যে আইনটি গ্রামীণ সামাজিক চুক্তিকে নতুন করে সাজাবে এবং কোটি কোটি শ্রমিককে প্রভাবিত করবে, সেই আইনটি কোনো গুরুতর কমিটি পর্যালোচনা, বিশেষজ্ঞের পরামর্শ এবং গণশুনানি ছাড়াই এভাবে চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়।"

প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করে তিনি আরও লেখেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদির লক্ষ্য স্পষ্ট: শ্রমশক্তিকে দুর্বল করা, গ্রামীণ ভারতের, বিশেষ করে দলিত, ওবিসি এবং আদিবাসীদের দর কষাকষির ক্ষমতা দুর্বল করা, ক্ষমতাকে কেন্দ্রীভূত করা এবং তারপর তাকে "সংস্কার" হিসেবে বিক্রি করা।“

উল্লেখ্য, ইউপিএ সরকারের ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প এমজিএনআরইজিএ (মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট অ্যাক্ট)-র পরিবর্তিত রূপ হল জি রাম জি বিল। রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পেলেই এটি এমজিএনআরইজিএ-র স্থলাভিষিক্ত হবে।

বিরোধীরা বিলটি সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানোর দাবি তুলেছিলেন। কিন্তু তা করা হয়নি। বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ১৫ পর্যন্ত আলোচনা চলার পরে ধ্বনিভোটে বিলটি পাশ হয় রাজ্যসভাতে। এর আগে বুধবারও মধ্যরাত পর্যন্ত এই বিল নিয়ে আলোচনা হয়েছিল লোকসভায়। বৃহস্পতিবার দুপুরে তা সংসদের নিম্নকক্ষে পাশ হয়।

অন্যদিকে, মধ্যরাতে উচ্চকক্ষে বিলটি পাশ হওয়ার পর সংসদ চত্বরে বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করেন বিরোধীরা। মহাত্মা গান্ধী এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি নিয়ে ধর্নায় বসেন তৃণমূল সাংসদরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ছবি পোস্ট করেছেন সাংসদ ঋতব্রত ব্যানার্জি।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাহুল গান্ধী
VB GRAMG: গ্রামীণ গরিব মানুষের কাজের অধিকার কেড়ে নিতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার - লোকসভায় অমরা রাম
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাহুল গান্ধী
Priyanka Gandhi: মনরেগার বদলি নতুন বিল গ্রামীণ কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা শেষ করে দেবে - প্রিয়াঙ্কা গান্ধী

SUPPORT PEOPLE'S REPORTER

ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in