
জেল হেফাজতেই মৃত্যু হয়েছে পারভাণী হিংসায় ধৃত যুবক সোমনাথ সূর্যবংশীর। এমনটাই অভিযোগ। লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর অভিযোগ, দলিত হওয়ার কারণেই ওই যুবককে মেরে ফেলা হয়েছে। তাঁর এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বিজেপি।
অমিত শাহ-র করা 'আম্বেদকর ইজ দ্য ফ্যাশন' মন্তব্যের পরেই বিরোধীরা বিজেপির বিরুদ্ধে দেশজুড়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। মহারাষ্ট্রের পারভাণীতেও বিক্ষোভ হয়। যা কার্যত হিংসার রূপ নেয়। ওই ঘটনায় ধৃত সোমনাথ সূর্যবংশীর মৃত্যু হলে তাঁর পরিবারের সাথে সোমবার দেখা করতে যান রাহুল গান্ধী। এই মৃত্যুর জন্য সরাসরি বিজেপি সরকার ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন কংগ্রেস সাংসদ।
রাহুল গান্ধী বলেন, "এই যুবককে হত্যা করা হয়েছে কারণ তিনি একজন দলিত এবং সংবিধান রক্ষার জন্য পথে নেমে ছিলেন। এটা নিশ্চিতভাবে হেফাজতে অত্যাচারের কারণে হওয়া মৃত্যু। পুলিশ ওকে মেরে ফেলেছে। আর এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে পুলিশকে রক্ষা করছেন। আরএসএসের আদর্শ হল সংবিধানকে মুছে ফেলা।''
অন্যদিকে রাহুল গান্ধীর পারভাণী যাওয়া নিয়ে কটাক্ষ করেছে গেরুয়া শিবির। তাঁদের মতে কংগ্রেস সাংসদ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়েই মৃত ব্যক্তির পরিবারের সাথে দেখা করেছেন। শুধুমাত্র ঘৃণা ছড়ানোর জন্য রাহুল গান্ধী এসেছেন বলে আক্রমণ করেছেন বিজেপি নেতারা। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবিশ পুনেতে সাংবাদিকদের বলেন, “রাহুল গান্ধী শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে এসেছেন। তাঁর কাজ মানুষের মধ্যে বিদ্বেষ সৃষ্টি করা। আমরা ওই যুবকের মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত করছি এবং এটি আদালতে বিচারাধীন।”
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, "যদি প্রমাণ হয় যে পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে, তাহলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অযথা মানুষের মধ্যে কেউ বিভেদ সৃষ্টি করবেন না"।
ইতিমধ্যেই পারভাণী হিংসার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তের পরিবারের জন্য ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে মহারাষ্ট্র সরকার।
প্রসঙ্গত, গত ১০ ডিসেম্বর পারভাণী শহরের রেল স্টেশনের বাইরে বাবাসাহেব আম্বেদকরের মূর্তির কাছে স্থাপিত সংবিধানের কাঁচ-ঘেরা প্রতিলিপি ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে হিংসা ছড়ায়। এই ঘটনার সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে আইনের ছাত্র সোমনাথ সূর্যবংশীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে জেল হেফাজতে তাঁর মৃত্যু হয়। এই নিয়ে মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে ক্রমশ উত্তাপ বাড়ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন