
আম্বেদকর ইস্যুতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর পদত্যাগ দাবি করে পথে নামছে বামেরা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে আগামী ৩০ ডিসেম্বর দেশজুড়ে বিক্ষোভ প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে পাঁচ বামপন্থী দল। এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সামিল হবে সিপিআইএম, সিপিআই, আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লক এবং সিপিআইএমএল লিবারেশন।
রবিবার দিল্লিতে এক বৈঠকে মিলিত হয় পাঁচ বাম দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। সোমবার বাম দলগুলোর পক্ষ থেকে যৌথ ভাবে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, সংসদে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আম্বেদকরকে নিয়ে অসম্মানজনক এবং অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন। তাই অমিত শাহের পদত্যাগ করা উচিত। ইতিমধ্যেই তাঁর পদত্যাগের দাবিতে দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভ ও প্রতিবাদ সংগঠিত হয়েছে। তবে, অমিত শাহ বা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কেউই দায়িত্ব নিতে এবং প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিতে রাজি নন।
এই কারণেই বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাম দলগুলো। আগামী ৩০ ডিসেম্বর অমিত শাহের পদত্যাগের দাবিতে দেশজুড়ে যৌথভাবে বিক্ষোভ প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে বামেরা।
উল্লেখ্য, ১৭ ডিসেম্বর রাজ্যসভায় সংবিধানের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত বিশেষ বিতর্কের সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, ‘এখন এক ফ্যাশন হয়েছে— আম্বেদকর, আম্বেদকর, আম্বেদকর, আম্বেদকর, আম্বেদকর, আম্বেদকর। এত বার যদি ভগবানের নাম নিতেন তবে সাত জন্ম স্বর্গবাস হত’।
অমিত শাহের এই মন্তব্যের পরেই উত্তাল হয়ে ওঠে সংসদের দুই কক্ষ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে এক জোটে প্রতিবাদে নামেন বিরোধীরা। যদিও অমিত শাহ এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়ে জানান, পুরো বিষয়টিই ভুল ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তাঁর মন্তব্যকে বিকৃতভাবে পেশ করেছে কংগ্রেস।
এছাড়া, সংসদে নয়া সংশোধনী বিল ‘এক দেশ, এক ভোট’ নীতির বিরুদ্ধেও দেশজুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি চালাবে বামেরা। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এক দেশ এক ভোট’ -এর নীতি গণতন্ত্র ও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপর আঘাত রাজ্য বিধানসভা গুলিকে জনগণ যে ক্ষমতা দিয়েছে তা খর্ব করার ব্যবস্থা হচ্ছে।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, রাজনৈতিক এবং সাধারণের জীবিকার সমস্যা ঘিরে যৌথ আন্দোলনে জোর দেবে তারা। এই বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালীন জাতীয় স্তরে চলবে নিয়মিত বৈঠক।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন সিপিআইএম পলিট ব্যুরোর সদস্য এবং কো-অর্ডিনেটর প্রকাশ কারাট, সিপিআই সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা, ফরওয়ার্ড ব্লকের সাধারণ সম্পাদক জি দেবরাজন, আরএসপি-র সাধারণ সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্য এবং সিপিআইএমএল লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য।
প্রসঙ্গত, সংসদে শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন পেশ হয় ‘এক দেশ এক ভোট’। যার নাম রাখা হয়েছে ‘কনস্টিটিউশন (ওয়ান হান্ড্রেড অ্যান্ড টুয়েন্টি নাইনথ অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল’ (Constitution (One Hundred and Twenty Ninth Amendment) Bill)। যে বিলে একইসাথে লোকসভা এবং বিভিন্ন বিধানসভার নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও ইউনিয়ন টেরিটরিস ল’জ (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০২৪ (Union Territories Laws (Amendment) Bill, 2024) নামের আরও একটি বিল আনার কথা বলা হয়েছে। যে বিলে জম্মু ও কাশ্মীর, পুদুচেরি এবং দিল্লির নির্বাচন একসঙ্গে করার কথা বলা হচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন