
আসাম সরকারের উচ্ছেদ অভিযানের বিরুদ্ধে পথে নামল বামেরা। মঙ্গলবার আসামের গোয়ালপাড়ায় ব্যাপক বিক্ষোভ দেখিয়েছে সিপিএইএম (CPIM)। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাকে হিটলারের সাথেও তুলনা করেন সিপিআইএম আসামের রাজ্য সম্পাদক সুপ্রকাশ তালুকদার।
গত শনিবার গোয়ালপাড়া জেলার পাইকান এলাকায় বুলডোজার দিয়ে উচ্ছেদ অভিযান চালায় প্রশাসন। প্রায় ৫ হাজার মানুষের বাস এই এলাকায়। রাক্ষসীনি গ্রামেও উচ্ছেদ অভিযান চলবে বলে নোটিশ জারি করা হয়। যার প্রতিবাদে মঙ্গলবার জেলাশাসকের অফিসের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে সিপিআইএম। আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে রাক্ষসীনি গ্রামে অভিযান চালানো হবে বলে জানানো হয়েছে সরকারে তরফে। এই নোটিশের তীব্র বিরোধিতা করেছে বামেরা।
মঙ্গলবার গোয়ালপাড়া জেলাশাসকের অফিসের সামনে প্রায় ৫ হাজার মানুষ বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। তাদের দাবি, অবিলম্বে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করতে হবে। গরিব মানুষ ঘরছাড়া অবস্থায় রাস্তায় রাত কাটাচ্ছে। ত্রিপল টাঙিয়ে থাকলেও পুলিশ আপত্তি করছে। এই অবস্থায় সেই মানুষগুলির বসবাসের ব্যবস্থা করতে হবে।
বিক্ষোভস্থলে সিপিআইএম আসামের রাজ্য সম্পাদক সুপ্রকাশ তালুকদার বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা হিটলারী শাসন চালাচ্ছেন। তিনি প্রথমে গরিব মুসলমানদের ঘরবাড়ি ভেঙেছেন। এখন উপজাতি আদিবাসীদের উচ্ছেদ করছেন। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি তিনি নাকি বাংলাদেশিদের উচ্ছেদ করছেন। সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা বলছেন তিনি। কারণ বাংলাদেশিদের যদি উচ্ছেদ করার হত তাহলে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হতো। কিন্তু তা হচ্ছে না। আসলে তিনি ভারতীয়দেরই উচ্ছেদ করছেন।'
তিনি আরও বলেন, 'গরিব মানুষদের উচ্ছেদ করে মুখ্যমন্ত্রী নিজের নামে কয়েকশো বিঘা জমি লিখিয়ে নিচ্ছেন। তাঁর মত অত্যাচারী মুখ্যমন্ত্রী এর আগে আসামবাসী দেখেনি। আসামকে কর্পোরেটদের জন্য ব্যবহার করছেন। তিনি আম্বানি আদানিদের কাছে জমি তুলে দিচ্ছেন।'
সরভোগের সিপিআইএম বিধায়ক মনোরঞ্জন তালুকদার বলেন, 'আমাদের দাবি খুবই স্পষ্ট। সরকারকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নদীতীরবর্তী এলাকায় উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলিকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ এবং পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। সিপিআইএমের দাবি মেনে নিতে না পারলে পদ্ধতি নিয়ে আলোচনার জন্য বিধানসভায় অধিবেশন ডাকুন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি যদি উচ্ছেদের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে পারেন তবে আমরা এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে রাস্তায় বসব না।'
অন্যদিকে, মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, 'আমি ১ লক্ষ ১৯ হাজার ৫৪৮ বিঘা জমি থেকে মানুষ উচ্ছেদ করে দিয়েছি। আগামী দিনেও উচ্ছেদ করব। একটি সম্প্রদায়ের মানুষ বিভিন্ন জেলায় ঘর বাড়ি তৈরি করে জনবিন্যাস পরিবর্তন করছে। এদেরকে উচ্ছেদ না করলে আগামী কুড়ি বছরে আসাম আর আসাম থাকবে না।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন