
দেশের বিভিন্ন কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নের ডাকে ৯ জুলাই দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘটে শামিল হতে চলেছেন ব্যাঙ্ক ও ইন্সিওরেন্স ক্ষেত্রের কর্মীরা। গত ২০ মে এই ধর্মঘট হবার কথা থাকলেও পহেলগাঁওয়ে জঙ্গী হানার ঘটনার কারণে এই ধর্মঘট পিছিয়ে দেওয়া হয়।
অল ইন্ডিয়া ইন্সিওরেন্স এমপ্লইয়িজ অ্যাসোসিয়েশন (AIIEA) জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের কর্পোরেট বান্ধব জনবিরোধী নীতির প্রতিবাদে এই ধর্মঘট। সারা দেশের প্রায় ২ কোটি শ্রমিক কর্মচারী এই ধর্মঘটে অংশ নেবেন বলে জানিয়েছে এআইআইইএ। সংগঠনের অভিযোগ, নতুন শ্রম আইন বর্তমান ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার খর্ব করছে এবং কেন্দ্রের বিভিন্ন সিদ্ধান্তে কর্পোরেটদের অনৈতিক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
আগামী বুধবারের এই ধর্মঘটে অংশ নিতে চলেছে AIBEA, AIBOA, BEFI, AIIEA, AILICEF, এবং AINLIEF (INTUC)। এক যৌথ বিজ্ঞপ্তিতে, ব্যাংক কর্মচারী ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া (BEFI) ধর্মঘটের মূল দাবিগুলি তুলে ধরেছে। যার মধ্যে শ্রমকোড বাতিল সহ আছে ব্যাংক এবং LIC-এর বেসরকারীকরণ এবং বিলগ্নিকরণ বন্ধ করা, বীমাতে FDI-তে 100% বৃদ্ধির বিরোধিতা করা এবং পাবলিক সেক্টরের সাধারণ বীমা সংস্থাগুলিকে একটি একক সত্তায় একীভূত করা।
ইউনিয়নগুলির পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শ্রমকোড লাগু হলে তা শ্রমিকদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করবে। ধর্মঘটের অন্যান্য দাবির মধ্যে আছে, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ, সরকারি ক্ষেত্রে বেসরকারিকরণ বন্ধ করা, বিভিন্ন স্কীমের অধীনে থাকা কর্মীদের স্থায়ীকরণ, ন্যূনতম মাসিক মজুরি ২৬ হাজার টাকা করা এবং পেনশন ৯ হাজার টাকা করা। এছাড়াও আছে কর্পোরেটদের কাছ থেকে অনাদায়ী ঋণ উদ্ধার, ব্যাঙ্কিং পরিষেবা চার্জ কমানো, জীবন ও স্বাস্থ্য বীমার ওপর জিএসটি প্রত্যাহার এবং ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার রক্ষার মত একাধিক দাবি।
আগামী ৯ জুলাইয়ের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে সিআইটিইউ, আইএনটিইউসি, এআইটিইউসি, ইউটিইউসি, এলপিএফ, এইচএমএস, টিইউসিসি, আইএনএলসি প্রভৃতি সংগঠন। এছাড়াও দেশের একাধিক গণসংগঠনের পক্ষ থেকে ৯ জুলাইয়ের ধর্মঘটে সমর্থন জানান হয়েছে। ট্রেড ইউনিয়নগুলির যৌথ মঞ্চের পক্ষ থেকে জানান হয়েছে সারা দেশে কমপক্ষে ২০ কোটি মানুষ এই ধর্মঘটে অংশগ্রহণ করবেন।
ধর্মঘট প্রসঙ্গে সিপিআইএম-এর মুখপত্র পিপলস ডেমোক্রেসিতে প্রকাশিত "July 9 Strike: Turning Point against Neoliberalism" শীর্ষক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, “কেন্দ্রে মোদীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার নির্লজ্জভাবে তাদের মনিব, তাদের দাতা - বৃহৎ কর্পোরেট হাউসগুলির আদেশ মেনে চলছে। সংসদে কোনও আলোচনা ছাড়াই শ্রম আইন, যার মধ্যে তিনটি ছিল তাদের কর্পোরেট প্রভুদের প্রতি আনুগত্যের প্রদর্শন। এই আইনগুলি শ্রমিক শ্রেণীকে তাদের ঐক্যবদ্ধ শক্তি, তাদের সংগঠন - ইউনিয়নের শক্তি থেকে বঞ্চিত করার এবং তাদের যৌথ কর্মকাণ্ডের, ধর্মঘটের অধিকার কেড়ে নেওয়ার মাধ্যমে তাদের নিরস্ত্র করার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন