সংবাদমাধ্যমের ওপর আক্রমণের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানানোর সিদ্ধান্ত নিলেন সাংবাদিকরা। আজ বুধবার বিকেল ৪টেয় দিল্লীতে প্রেস ক্লাব অফ ইন্ডিয়ার সামনে নিউজক্লিক দপ্তরে পুলিশ হানা, সাংবাদিকদের আটক, সাংবাদিকের ব্যবহৃত ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করার বিরুদ্ধে তাঁরা প্রতিবাদে শামিল হবেন। এই তল্লাশি অভিযানকে আরও একবার সংবাদমাধ্যমের মুখ বন্ধের চেষ্টা বলেও সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে নিউজক্লিক-এর ওপর পুলিশি হামলার খবর ছড়িয়ে পড়তেই সাড়া পড়ে যায় সাংবাদিক মহলে। ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই প্রেস ক্লাব অফ ইন্ডিয়ার এক্স হ্যান্ডেল থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দেওয়া হয়। যে সব সাংবাদিকদের হেনস্থা করা হচ্ছে তাঁদের প্রতি পূর্ণ সংহতি জানিয়ে এই বিষয়ে সরকারের কাছে বিশদে মুখ খোলারও দাবি জানানো হয়। পরে দুপুরে স্বতঃস্ফর্তভাবে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত সাংবাদিক, কর্মীর পাশাপাশি সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের পদাধিকারীরা মিলিত হন প্রেস ক্লাবে। সেখান থেকেই বুধবার প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়।
সাংবাদিকদের মতে, সরকারের এই ভূমিকা নতুন নয়। এর বিরুদ্ধে লাগাতার লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। এই আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। কীভাবে দেশে সন্ত্রাসবাদী দমনের কঠোরতম আইন সাংবাদিকদের ওপর প্রয়োগ করা হচ্ছে তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সাংবাদিকরা।
নিউজক্লিক-এর ওপর পুলিশি হানার প্রতিবাদে সরব হয়েছে এডিটার্স গিল্ড-ও। মঙ্গলবারই এক বিবৃতিতে এই ঘটনাকে ফের সংবাদমাধ্যমের মুখবন্ধের চেষ্টা বলে অভিযোগ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারকে গণতন্ত্র বজায় রাখার স্বার্থে স্বাধীন সংবাদমাধ্যমের গুরুত্ব স্মরণ করিয়ে দিয়ে চতুর্থ স্তম্ভের সম্মান, লালনপালন এবং সুরক্ষা সুনিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে এডিটরস গিল্ড। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, প্রকৃত অপরাধী হলে আইন তার নির্ধারিত পথেই চলবে। গিল্ড আরও জানিয়েছে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পাশাপাশি বিরোধী ও সমালোচনামূলক স্বরকে বন্ধ করে দেওয়া অযৌক্তিক।
মঙ্গলবার সকাল থেকে একের পর এক সাংবাদিকদের যেভাবে পুলিশি তল্লাশির নামে হেনস্থা করা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে যৌথ বিবৃতি দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স অফ জার্নালিস্টস এবং দিল্লি ইউনিয়ন অব জার্নালিস্টস। সাংবাদিক ছাড়াও সঞ্চালক, সমাজকর্মী, হাস্যকৌতুক শিল্পী, শিক্ষাবিদদের বিরুদ্ধে যে আচরণ করেছে পুলিশ তারও নিন্দা করা হয়েছে ওই বিবৃতিতে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দানবীয় ইউএপিএ ধারায় এফআইআর-এর ভিত্তিতে এঁদের বাড়ি এবং দপ্তরে হানা দেয় পুলিশ। আসলে এই তল্লাশি অভিযান সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় মুখবন্ধের চেষ্টা ছাড়া কিছু নয়। দিল্লি হাইকোর্টে যাবতীয় তথ্য, নথি দাখিলের পরেও, তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছে নিউজক্লিক দপ্তরে।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।