

আর কয়েকদিন পরেই বিহার নির্বাচন। তার আগেই ফের বিতর্কে প্রাক্তন ভোটকুশলী তথা জন সূরাজ পার্টির প্রধান প্রশান্ত কিশোর (Prashant Kishor)। জানা গেছে, পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার - একই সঙ্গে দুই রাজ্যের ভোটার তালিকায় তাঁর নাম রয়েছে। এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে।
সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকায় প্রশান্ত কিশোরের ঠিকানা হিসেবে রয়েছে ১২১, কালীঘাট রোড, যা মূলত তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য কার্যালয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুরের অধীনে এটি। তাঁর ভোটকেন্দ্র হিসেবে নথিভুক্ত বি রানি শঙ্করী লেনের সেন্ট হেলেন স্কুল। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময় পিকে ছিলেন রাজ্যের শাসক দলের নির্বাচনী পরামর্শদাতা।
অন্যদিকে, বিহারের রোহতাস জেলার কারগাহার বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত এলাকাতেও ভোটার হিসেবে নাম রয়েছে পিকের। সেই তালিকায় তাঁর ভোটকেন্দ্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে কোনার মাধ্যমিক বিদ্যালয়, যা তাঁর পৈতৃক গ্রাম।
দুই রাজ্যের ভোটার তালিকায় পিকের নাম প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জল্পনা। যদিও এনিয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেননি পিকে। তবে তাঁর দলের এক সদস্যের কথায়, “বঙ্গের ভোট শেষ হওয়ার পরই তিনি বিহারে ভোটার হন। পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকা থেকে ইতিমধ্যেই নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন তিনি।” যদিও সেই আবেদন বর্তমানে কোন পর্যায়ে আছে, তা স্পষ্ট নয়।
এমনকি এবিষয়ে বিহারের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক বিনোদ সিং গুঞ্জিয়ালও মন্তব্য করতে চাননি। তবে নির্বাচন কমিশনের একটি সূত্র জানিয়েছে, দেশে একাধিক স্থানে এক ব্যক্তির নাম থাকা কোনও নতুন ঘটনা নয়। যে কারণে কমিশন ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (Special Intensive Revision - SIR) শুরু করেছে। প্রথম পর্যায়ে হয়েছে বিহারে। যেখানে মোট ৬৮.৬৬ লক্ষ নাম বাদ পড়েছে তালিকা থেকে! যার মধ্যে ৭ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ পড়ার কারণ একাধিক স্থানে নাম থাকা।
উল্লেখযোগ্যভাবে, জনপ্রতিনিধিত্ব আইন ১৯৫০-এর ধারা ১৭ অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তি একাধিক বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার তালিকায় নাম রাখতে পারেন না। একইভাবে ধারা ১৮-তেও বলা হয়েছে, একই কেন্দ্রে একাধিকবার নাম তোলা বেআইনি। তবে কোনও ভোটার বাসস্থান পরিবর্তন করলে, ফর্ম ৮ পূরণ করে নতুন ঠিকানায় নাম স্থানান্তরের সুযোগ রয়েছে।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভবানীপুরের তৃণমূল কাউন্সিলর কাজরি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “১২১, কালীঘাট রোড আমাদের দলীয় কার্যালয়। প্রশান্তবাবু তখন এখানে কাজ করতেন, প্রায়ই থাকতেন। তিনি এখান থেকে ভোটার হিসেবে নাম তুলেছিলেন কি না, তা আমরা জানি না।”
এদিকে এনিয়ে সিপিআইএমের ভবানীপুর-২-এর সম্পাদক বিশ্বজিৎ সরকার দাবি করেছেন, “আমরা নির্বাচন কমিশনে লিখিতভাবে জানিয়েছিলাম যে, প্রশান্ত কিশোর ভবানীপুরের বাসিন্দা নন। তাই তাঁর নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া উচিত।”
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন