
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণের পরই মহারাষ্ট্র সরকারের ১৯৯৮ সালে বনবহির্ভূত কার্যকলাপের উদ্দেশ্যে বনভূমির জমি হস্তান্তরের নির্দেশকে "অবৈধ" বলে রায় দিলেন বিচারপতি বি আর গাভাই। যা পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা।
সুপ্রিম কোর্টে পুণে জমি কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত একটি মামলার পর্যবেক্ষণে এই রায় দেন প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই। আদালত জানায়, "এটই কেলেঙ্কারি রাজনীতিবিদ, আমলা এবং নির্মাতাদের মধ্যে যোগসাজশের একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ।"
রায়ে আদালত আরও জানায়, ১৯৯৮ সালের জুলাই থেকে আগস্টের মধ্যে মহারাষ্ট্র সরকার যে গতিতে বনভূমির জমি ব্যবহারে পরিবর্তন আনে, তাতে স্পষ্ট ভাবে বোঝা যায় যে তৎকালীন রাজস্বমন্ত্রী এই অনিয়মে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন।
বিতর্কিত মামলাটি পুণের কোন্ধোয়া বুদরুক অঞ্চলের ১১.৮৬ একর বনভূমি রিচি রিচ কলোনি নামে একটি আবাসন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দের সঙ্গে সম্পর্কিত। বন বিভাগের আপত্তি সত্ত্বেও রাজ্য সরকার এই কাজ করেছিল। সুপ্রিম কোর্ট জানায়, এই বরাদ্দ এবং পরিবেশগত ছাড়পত্র—দুটিই অবৈধ।
এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে শীর্ষ আদালত দেশের সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে নির্দেশ দিয়েছে, তারা যেন খতিয়ে দেখে কোথাও বনভূমির জন্য বরাদ্দ করা জমি অন্য কোনো উদ্দেশ্যে বেসরকারি পক্ষকে হস্তান্তর করা হয়েছে কিনা।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, এই ধরণের সমস্ত সংরক্ষিত বনভূমি বন বিভাগের অধীনে ফিরিয়ে দিতে হবে। সেই সঙ্গে মুখ্য সচিবদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বনভূমি যেন নির্দ্বিধায় বন বিভাগকে হস্তান্তর করা হয়। এমনকি রূপান্তরের ফলে যদি কোনো জমি বনশূন্য হয়ে পড়ে, তবে সেখানে যথাযথ বনায়নের পরিকল্পনা নিতে হবে।
আদালতের স্পষ্ট নির্দেশ, কেন্দ্রের অনুমোদন ছাড়া কোনও রাজ্য সরকার সংরক্ষিত বনভূমি ইজারা দিতে বা বরাদ্দ করতে পারবে না। এই ঐতিহাসিক রায় দেশের বনসুরক্ষা নীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করল বলেই মত পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের।
উল্লেখ্য, বুধবারই সুপ্রিম কোর্টের ৫২তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন ভূষণ রামকৃষ্ণ গাভাই। চলতি বছর ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত প্রধান বিচারপতি দায়িত্ব সামলাবেন বিআর গাভাই। তিনিই হলেন ভারতের প্রথম বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী প্রধান বিচারপতি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন