মন্দির মসজিদ বিতর্কের আর কোনও পিটিশন আপাতত গ্রহণ করা হবে না। বৃহস্পতিবার ১২ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্ট এই নির্দেশ জারি করেছে। এদিন শীর্ষ আদালত আরও জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই যে সব আবেদন আদালত গ্রহণ করেছে, সেগুলো চলবে। এদিন শীর্ষ আদালতের তিন বিচারপতির বেঞ্চ এই নির্দেশ জারি করেছে।
বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি কে ভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চে প্লেস অফ ওয়ারশিপ অ্যাক্ট সংক্রান্ত এই নির্দেশ জারি করে হয়েছে। এই বিষয়ে কেন্দ্রকে পরবর্তী চার সপ্তাহের উত্তর দিতে বলা হয়েছে। এদিন শুনানিতে আইনজীবী রাজু রামচন্দ্রন আদালতে জানান, ১০ টি ধর্মীয় স্থান নিয়ে বর্তমানে ১৮টি মামলা আছে।
বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ, মথুরার শাহী ইদগাহ মসজিদ এবং সম্ভলের শাহী জামা মসজিদ সহ বিভিন্ন আদালতে দায়ের করা একাধিক মামলার ক্ষেত্রে দাবি করা হয়েছে যে এগুলি অতীতে মন্দির ধ্বংস করে নির্মিত হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে ওইসব মন্দিরে হিন্দুদের প্রার্থনা করার জন্য আদালতের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়।
একাধিক জনস্বার্থ মামলার কারণে এদিনের শুনানি হয়। যেসব পিটিশনে ১৯৯১ সালের আইনের কিছু বিধানের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করা হয়। ওইসব পিটিশনে ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট উপাসনার স্থান যে অবস্থায় ছিল তার চরিত্রগত পরিবর্তনে নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত নিয়মে বদল আনতে চাওয়া হয়। ১৯৯১ সালের আইনে বলা আছে, ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট দেশের যে ধর্মীয় স্থানের যা চরিত্র ছিল তা অপরিবর্তিত থাকবে।
গত ৯ ডিসেম্বর এই সংক্রান্ত বিষয়ে এক বিবৃতিতে সিপিআইএম পলিটব্যুরো জানায়, বারাণসী এবং মথুরার পর, সম্ভলে ষোড়শ শতাব্দীর এক মসজিদে সমীক্ষা করার নির্দেশ এক নিম্ন আদালত। যার ফলে ওই অঞ্চলে হিংসা ছড়ায় এবং চার মুসলিম যুবকের মৃত্যু হয়। এরপরে আজমীড়ের সিভিল কোর্টে আজমীর শরীফ দরগা নিয়ে একই ধরণের এক পিটিশন দাখিল করা হয়েছে।
বিবৃতিতে সিপিআইএম পলিটব্যুরো আরও বলে, ২০১৯ সালে অয্যোধ্যা বিতর্কে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চের রায় আইনের বৈধতা এবং এর প্রয়োগকে বহাল রেখেছে। এই নির্দেশের প্রেক্ষিতে, আইনি প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হস্তক্ষেপ করা শীর্ষ আদালতের দায়িত্ব, যা আইন লঙ্ঘন করছে। এই নির্দেশের ভিত্তিতে উপাসনাস্থল আইন বিরোধী বিচারবিভাগীয় পদক্ষেপ বন্ধ করতে শীর্ষ আদালতের হস্তক্ষেপ করা জরুরি। যদিও দুর্ভাগ্যজনক ভাবে সুপ্রিম কোর্ট উপাসনাস্থল (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১ প্রয়োগ করে এই ধরনের মামলা বন্ধ করায় হস্তক্ষেপ করেনি।
ওইদিনই উপাসনাস্থল আইন নিয়ে মামলায় সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জমা দেয় সিপিআইএম। আবেদনে সিপিআইএম জানায়, ভারতের সাংবিধানিক সৌভ্রাতৃত্ব, ধর্মনিরপেক্ষতা, সমতা এবং আইনের শাসন সুরক্ষিত থাকুক।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন