

জামাত-ই-ইসলামী এবং হিন্দুত্ববাদী সংগঠন একই স্বভাববিশিষ্ট এবং কংগ্রেস নিজেদের নির্বাচনী লাভের জন্য এই ধরণের মুসলিম সংগঠনের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছে। যে জোট তাদের কাছে ‘আত্মঘাতী’ হয়ে দাঁড়াবে। শুক্রবার কোচিতে একথা বলেছেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী ও সিপিআইএম নেতা পিনারাই বিজয়ন।
পিনারাই বলেন, হিন্দুত্ববাদী শক্তি এবং রাজনৈতিক ইসলামপন্থী – দু’দলই ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদের প্রচারক এবং এরা দু’দলই ধর্মের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত শাসনব্যবস্থা চায়। এঁদের আদর্শ হিটলার এবং মুসোলিনীর মত বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
শুক্রবার এরনাকুলাম প্রেস ক্লাবে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে এসে বর্ষীয়ান সিপিআইএম নেতা বলেন, জামাত-ই-ইসলামী কেরালার বিভিন্ন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে, যদিও তারা রাজ্যের কোনও ঐতিহ্যবাহী সংগঠন নয়। কেরালার মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে সুন্নি, মুজাহিদ এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু অংশ রয়েছে, যাদের বেশিরভাগই জামাত-ই-ইসলামীকে স্বীকৃতি দেয় না।
বিজয়ন বলেন, রাজ্যের কংগ্রেস পরিচালিত ইউডিএফ-এর ভোটাররা কোনোভাবেই জামাত-ই-ইসলামীর আদর্শ এবং রাজনীতি মেনে নিতে পারবে না। কংগ্রেস শুধুমাত্র ভোটের জন্য এই ধরণের অসাধু জোট করছে। যা কংগ্রেসের কাছে ‘আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত’ হয়ে দাঁড়াবে।
তাঁর মতে, জামাত-ই-ইসলামী ভারত, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের মুসলিমদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছে। ভারতে রাজনৈতিক ইসলামপন্থীরা এবং হিন্দুত্ববাদীরা একই পথের পথিক। আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে তারা একে অপরের বিরোধিতা করে, কিন্তু তারা নিজেদের মধ্যে সহযোগিতার পথ ধরেই চলে।
বিজয়নের অভিযোগ, ২০১১ সালে জামাত-ই-ইসলামীর রাজনইতিক শাখা ওয়েলফেয়ার পার্টি অফ ইন্ডিয়ার সূচনার সময় সেখানে অন্য সংগঠনের একমাত্র ব্যক্তি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি সংখ্যালঘু্ মোর্চার নেতা ডঃ জে কে জৈন। তাঁর আরও অভিযোগ, ২০২৩ সালেও এই সংগঠন আরএসএস-এর সঙ্গে বৈঠক করেছে।
তিনি আরও বলেন, জম্মু ও কাশ্মীরের নির্বাচনের সময় সিপিআইএম নেতা ইউসুফ তারিগামীকে পরাজিত করার জন্য জোট বেঁধেছিল বিজেপি এবং জামাত-ই-ইসলামী। যদিও সেই চক্রান্ত ভেদ করে জয়ী হয়েছেন তারিগামী।
কেরালার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান জাতীয় প্রেক্ষাপটে ধর্মনিরপেক্ষতা এবং দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এইসব দেশ প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। বাম দলগুলি এবং এলডিএফ কেরালায় ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধ রক্ষা করা এবং শক্তিশালী করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি ভোটারদের কাছে আসন্ন নির্বাচনে এই মূল্যবোধগুলির প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর আহ্বান জানান।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন