
জম্মু ও কাশ্মীরে বিজেপির প্রতিবাদ সভা চলাকালীন কর্মরত অবস্থায় আক্রান্ত হলেন এক সাংবাদিক। বুধবার জম্মু ও কাশ্মীরের কাঠুয়ার কালিবাড়ি চকে এই ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন দৈনিক জাগরণ-এর সাংবাদিক রাকেশ শর্মা। সাংবাদিকদের সংগঠনের পক্ষ থেকে কাঠুয়ার এসপি-র সঙ্গে দেখা করে এই ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত এবং এফআইআর করার দাবি জানিয়েছেন।
আহত সাংবাদিক রাকেশ শর্মা জানিয়েছেন, তিনি কালিবাড়ি চকে পহেলগাঁও জঙ্গী হানার প্রতিবাদে বিজেপির এক বিক্ষোভ সভায় উপস্থিত ছিলেন। এই সভায় ছিলেন বিজেপি বিধায়ক দেবীন্দর মানিয়াল, রাজীব জাসরোটিয়া, ভারত ভূষণ সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। সংবাদসংস্থার সূত্র অনুসারে, এই সভাতেই সাংবাদিক রাকেশ পহেলগাঁও-এর ঘটনায় নিরাপত্তার ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় তাঁর ওপর চড়াও হন বিজেপি কর্মী হিমাংশু শর্মা সহ আরও অনেকে।
বিজেপি কর্মী হিমাংশু শর্মার বক্তব্য, সাংবাদিক রাকেশ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মত কথা বলছেন এবং নিরাপত্তার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের। সাংবাদিক কীভাবে নিরাপত্তার গাফিলতি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন?
ইতিমধ্যেই সাংবাদিককে মারধোর করার এক ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। যদিও এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি পিপলস রিপোর্টার। যে ভিডিওতে সাংবাদিককে ছুটতে দেখা যাচ্ছে এবং দেখা গেছে তাঁর পেছনে বেশ কিছু ব্যক্তি ছুটছেন এবং তাঁকে মারছেন। ওই ভিডিওতেই দেখা গেছে পুলিশ ওই সাংবাদিককে উদ্ধার করে গাড়িতে তুলছেন।
সংবাদমাধ্যমের সূত্র অনুসারে, ঘটনার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন দেবীন্দর মানিয়াল। তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জানান, তারা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কড়া ব্যবস্থা নেবার দাবি জানিয়ে চিঠি দিচ্ছেন। যদিও এরপরেই পহেলগাঁওয়ের ঘটনায় এবং অনুপ্রবেশের ঘটনায় কেন্দ্রের ব্যর্থতার কথা জিজ্ঞাসা করা হতেই কিছু বিজেপি কর্মী উত্তেজিত হয়ে সাংবাদিককে আক্রমণ করে।
আহত সাংবাদিক রাকেশ শর্মা জানিয়েছেন, তাঁকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করেন ডিএসপি রবীন্দর সিং এবং তিনিই তাঁকে স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান।
এই ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার জম্মু ও কাশ্মীরের সাংবাদিকরা কালো ব্যাজ পরে কাজ করছেন এবং তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিজেপির পক্ষ যতক্ষণ পর্যন্ত এই ঘটনার সঙ্গে যুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ততক্ষণ কোনো সাংবাদিক বিজেপির কোনও কর্মসূচিতে যাবেন না। এদিনই জম্মুতে প্রেস ক্লাবের বাইরে বেশ কিছু সাংবাদিক কাঠুয়ার ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখান।
জম্মু ও কাশ্মীর প্রদেশ কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, এখন প্রশ্ন করাও সাংবাদিকদের কাছে অপরাধের কাজ হয়ে যাচ্ছে। যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক এবং নিন্দনীয়। এখন এমন অবস্থা হয়েছে যে দেশের এক প্রধান সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকও নিরাপদ নন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন