
বর্তমান পরিস্থিতিতে উত্তেজনা বাড়ানোর কোনও অভিপ্রায় ভারতের নেই। কিন্তু পাকিস্তান যদি তা করে তবে ভারত ‘দৃঢ় প্রতিশোধ’ নিতে প্রস্তুত। বুধবার বিভিন্ন দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের একথা জানিয়েছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল।
পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের (POK) জঙ্গী শিবিরগুলিতে ভারতের নির্ভুল হামলার কয়েক ঘন্টা পর, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব এবং জাপানের নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের টেলিফোন কথোপকথনে জানিয়েছেন যে, ভারতের উত্তেজনা বাড়ানোর কোনও ইচ্ছা নেই। তবে ইসলামাবাদ যদি উত্তেজনা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় তবে 'দৃঢ় প্রতিশোধ' নেওয়ার জন্য নয়াদিল্লি সরকার দৃঢ় সংকল্প।
গতকালের হানার পর এদিন অজিত ডোভাল জাপান, সৌদি আরব, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের আধিকারিকদের পাকিস্তান এবং পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী কাঠামোয় ভারতের হামলা সম্পর্কে অবহিত করেন। জানা গেছে, তিনি রাশিয়া এবং ফ্রান্সের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, যুক্তরাজ্যের জোনাথল পাওয়েল, সৌদি আরবের মুসাইদ আল আইবান, সংযুক্ত আরব আমীরশাহীর এইচ এইচ শেখ তাহনুন, জাপানের মাসাতাক ওকানো, রাশিয়ার সেরগেই শোগুই, সিপিসি কেন্দ্রীয় কমিটির রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য ওয়াং ই, ফ্রান্সের ইমান্যুয়েল বোনের কূটনৈতিক উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলেছেন।
এক আধিকারিকের বক্তব্য অনুসারে, এই আলোচনায় অজিত ডোভাল খুব জোর দিয়ে বলেছেন যে, ভারতের পক্ষ থেকে উত্তেজনা বাড়ানোর কোনও ইচ্ছা নেই। কিন্তু পাকিস্তানের ভূমিকায় যদি উত্তেজনা বেড়ে চলে সেক্ষেত্রে ভারত দৃঢ়ভাবে প্রতিশোধ নিতে প্রস্তুত।
বুধবার গভীর রাতে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি জায়গায় ভারত হামলা চালায়। ‘অপারেশান সিঁদুর’ হামলায় মূল লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানের অভ্যন্তরে থাকা সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটি। মূলত সেই ঘাঁটি লক্ষ্য করেই আক্রমণ চালিয়েছে ভারত। গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গী হানায় ২৬ জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যুর পর ৭ মে গভীর রাতে পাকিস্তানের ৯টি জঙ্গীঘাঁটি লক্ষ্য করে আক্রমণ চালায় ভারত।
এই প্রসঙ্গে রাত ১.৪৪ মিনিটে ভারতীয় সেনার পক্ষ থেকে এক বার্তায় বলা হয়েছে, “যেখান থেকে ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা এবং নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল কিছুক্ষণ আগে, ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তান এবং পাক-অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের সেই সন্ত্রাসী পরিকাঠামো ধ্বংস করে 'অপারেশন সিন্দুর' শুরু করেছে।”
প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর পদক্ষেপগুলি “লক্ষ্যভিত্তিক, সুনির্দিষ্ট এবং প্ররোচনাহীন”। “পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কোনও কেন্দ্রে আঘাত হানা হয়নি। লক্ষ্য নির্বাচন এবং তা কার্যকর করার পদ্ধতিতে ভারত যথেষ্ট সংযম প্রদর্শন করেছে।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন