
পুলিশের হাতে গুলিবিদ্ধ হওয়া ওড়িশার মন্ত্রী নব কিশোর দাসের মৃত্যু হল হাসপাতালে। রবিবার দুপুর ২ টা নাগাদ ওড়িশার ঝাড়সুগুদা জেলার ব্রজরাজনগরের গান্ধী চকের কাছে মন্ত্রীর বুক লক্ষ্য করে দুই রাউন্ড গুলি চালান এক সহকারী সাব ইন্সপেক্টর। ভুবনেশ্বরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন মন্ত্রী। সেখানেই সন্ধ্যায় মৃত্যু হয় তাঁর।
হাসপাতাল থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "মন্ত্রীর আঘাতের চিকিৎসা শুরু হয়েছিল। হার্টের পাম্পিং সিস্টেম উন্নত করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। জরুরী আইসিইউতে দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু সর্বোত্তম প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, তাঁকে বাঁচানো যায়নি।"
প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানান, দুটো গুলিই মন্ত্রীর বুকে লাগে। তৎক্ষণাৎ মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর এয়ারলিফট করে ভুবনেশ্বরে নিয়ে আসা হয়। নবীন পট্টনায়কের মন্ত্রিসভায় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দায়িত্বে ছিলেন নব কিশোর দাস।
ব্রজরাজনগরের সাব ডিভিশনাল পুলিশ অফিসার গুপ্তেশ্বর ভোই সাংবাদিকদের বলেন, "পুলিশের এক এএসআই (Assistant Sub-inspector) গোপাল দাস আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে সরাসরি গুলি চালান।" গুলি চালানোর পরই গোপাল দাসকে স্থানীয়রা ধরে ফেলে। তাঁকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে মন্ত্রীকে আক্রমণের কারণ এখনও জানা যায়নি।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক। তিনি বলেন, "এই ঘটনায় আমি হতবাক। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আমি এর তীব্র নিন্দা করছি। ক্রাইম ব্রাঞ্চকে এই ঘটনার তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ক্রাইম ব্রাঞ্চের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে তথ্য সংগ্রহের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।"
গান্ধী চকে একটি পাবলিক গ্রিভান্স অফিস উদ্বোধন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন নব কিশোর দাস। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অনুষ্ঠানস্থলে মন্ত্রী উপস্থিত এসে পৌঁছালে, তাঁকে স্বাগত জানাতে প্রচুর ভিড় জমে যায়। মন্ত্রী গাড়ি থেকে বেরোনোর পরই পরপর দুবার বিকট আওয়াজ হয় এবং সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি।
মন্ত্রীকে আক্রমণের পরের দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, মন্ত্রীর বুক থেকে রক্ত ক্ষরণ হচ্ছে। কয়েকজন তাঁকে ধরাধরি করে একটি গাড়ির সামনের সিটে বসানোর চেষ্টা করছেন। মন্ত্রী অচৈতন্য অবস্থায় রয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
এক প্রতক্ষ্যদর্শী বলেন, "আমরা এক পুলিশ অফিসারকে খুব কাছ থেকে মন্ত্রীকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে দেখেছি। তারপর উনি ছুটে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।"
এই ঘটনার পর ব্রজরাজনগরে উত্তেজনা তৈরী হয়েছে। এলাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
GOOGLE NEWS-এ আমাদের ফলো করুন