Nepal: প্রবল বর্ষণে বিধ্বস্ত নেপাল, মৃত অন্তত ৬০, উদ্ধারকাজে তিন বাহিনী, পাসে থাকার বার্তা মোদির

People's Reporter: শনিবার রাত থেকে হওয়া অবিরাম বর্ষণে পাহাড়ি ঢালের মাটি নরম হয়ে পড়ায় একাধিক জায়গায় ভূমিধস নেমেছে। বহু ঘরবাড়ি ধসে পড়েছে, ধানক্ষেত জলের নীচে। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে।
বন্যায় বিধ্বস্ত নেপাল
বন্যায় বিধ্বস্ত নেপালছবি - সংগৃহীত
Published on

প্রবল বর্ষণ ও ধারাবাহিক ভূমিধসে বিপর্যস্ত পূর্ব নেপালের ইলাম ও আশপাশের এলাকা। গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে সরকারি সূত্রে নিশ্চিত করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও কয়েকজন। হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। নেপালের সেনা, সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী এবং উদ্ধারকর্মীরা দিনরাত এক করে চলছে দুর্গতদের উদ্ধারে।

শনিবার রাত থেকে হওয়া অবিরাম বর্ষণে পাহাড়ি ঢালের মাটি নরম হয়ে পড়ায় একাধিক জায়গায় ভূমিধস নেমেছে। বহু ঘরবাড়ি ধসে পড়েছে, ধানক্ষেত জলের নীচে। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে। স্থানীয় প্রশাসন বলছে, বেশ কিছু গ্রামের সাথে বাইরের জগতের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

কোশি প্রদেশ পুলিশের মুখপাত্র এসএসপি দীপক পোখরেল রবিবার সকালে জানান, “সুর্যোদয় পৌরসভায় পাঁচজন, মাংসেবুঙে তিনজন, ইলাম পৌরসভায় ছয়জন, দেউমাই এলাকায় তিনজন এবং ফাকফোকথুম গ্রাম পরিষদে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আরও কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন।"

নেপালের ন্যাশনাল ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (NDRRMA) জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত অন্তত ৪৩ জনের মৃত্যু ও পাঁচজন নিখোঁজের খবর পাওয়া গেছে, তবে স্থানীয় প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা ৬০ ছাড়িয়েছে। কাঠমান্ডু উপত্যকা ও কোশি প্রদেশের বিভিন্ন জেলায় উদ্ধার ও ত্রাণকাজ ত্বরান্বিত করা হয়েছে।

শনিবার সকাল থেকেই সেনা, সশস্ত্র পুলিশ ও নেপাল পুলিশের তিন বাহিনী একযোগে উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে। বিশেষত কাঠমান্ডু উপত্যকার নদীপাড়ের জনপদে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বন্যাপ্রবণ এলাকায় স্কুল ভবন, মঠ ও সরকারি ভবনকে অস্থায়ী ত্রাণশিবিরে পরিণত করা হয়েছে।

দেশটির হাইড্রোলজি ও মেটিওরোলজি বিভাগ জানিয়েছে, একাধিক নদীর জলস্তর বিপজ্জনকভাবে বেড়েছে। বাগমতী, হনুমন্তে, মনোহরা, ধোবি খোলা, বিষ্ণুমতী, নাখু ও বালখু নদী উপচে পড়ছে। কর্তৃপক্ষ নাগরিকদের নদীতীরবর্তী এলাকা থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে।

পরিস্থিতির মোকাবিলায় কাঠমান্ডু ও আশপাশের জেলাগুলিতে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সরকার জরুরি ত্রাণ তহবিল থেকে অর্থ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

NDRRMA-র সর্বশেষ বুলেটিন অনুযায়ী, অন্তত ২০টি জেলা বন্যা ও ভূমিধসের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে — সুনসারি, উদয়পুর, সাপ্তরী, সিরাহা, ধনুষা, মহোত্তরী, সরলাহি, রৌতহাট, বারা, পারসা, সিন্ধুলি, দোলাখা, রামেচাপ, সিন্ধুপালচক, কাভ্রেপালাঞ্চক, কাঠমান্ডু, ললিতপুর, ভক্তপুর, মাকওয়ানপুর ও চিতওয়ান।

চলতি মরশুমে নেপাল সরকার আগেই গড়ের চেয়ে বেশি বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছিল। কিন্তু আবহাওয়ার ধরণ বদলেছে। সাধারণত জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মনসুন চললেও, এবার বর্ষা চলে যাওয়ার সময়েও প্রবল বর্ষণ দেখা দিয়েছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে। NDRRMA অনুমান করছে, এ বছর প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ, অর্থাৎ ৪ লক্ষ ৫৭ হাজারেরও বেশি পরিবার, মনসুন-সংক্রান্ত বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এই বিপর্যয়ের মাঝেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রতিবেশী নেপালের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, “নেপালে প্রবল বর্ষণে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির খবর গভীরভাবে মর্মাহত করেছে। এই কঠিন সময়ে আমরা নেপালের জনগণ ও সরকারের পাশে আছি। বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী এবং প্রথম প্রতিক্রিয়াদাতা হিসেবে ভারত যেকোনো সহায়তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

বন্যায় বিধ্বস্ত নেপাল
উত্তরবঙ্গে বিপর্যয়ে মৃতদের পরিবার পিছু ৫ লক্ষ ক্ষতিপূরণ ঘোষণা মমতার! ফের কাঠগড়ায় তুললেন ডিভিসিকে
বন্যায় বিধ্বস্ত নেপাল
ত্রাণ বিলি করতে গিয়ে রক্তাক্ত বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু! 'তৃণমূলের জঙ্গল রাজ' - কটাক্ষ অমিত মালব্যর

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in