মুম্বাই ট্রেন হামলায় সকল দোষীকে মুক্তি - হাইকোর্টের রায় চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে মহারাষ্ট্র সরকার

People's Reporter: সোমবার বম্বে হাইকোর্টে ছিল মামলার শুনানি। শুনানিতে বিচারপতি অনিল কিলোর এবং বিচারপতি শ্যাম চন্দকের বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত প্রমাণের অভাব রয়েছে।
মুম্বাই ট্রেন হামলা
মুম্বাই ট্রেন হামলা
Published on

২০০৬ সালে মুম্বাইয়ের লোকাল ট্রেনে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত ১২ জনকে বেকসুর মুক্তি দিয়েছিল বম্বে হাইকোর্ট। আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত প্রমাণের অভাব রয়েছে। শুধুমাত্র সন্দেহর কারণে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। হাইকোর্টের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছে মহারাষ্ট্রের সন্ত্রাসদমন শাখা (এটিএস)। আগামী বৃহস্পতিবার মামলাটি শুনতে রাজি হয়েছে শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাই, বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রন এবং বিচারপতি এনভি আঞ্জারিয়ার বেঞ্চ।

মুম্বাইয়ের লোকাল ট্রেন বিস্ফোরণের ঘটনায় ১২ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল নিম্ন আদালত। যাঁদের মধ্যে পাঁচ জনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। বাকি সাতজনের বিস্ফোরণের ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। এদের মধ্যে কামাল আনসারী ২০২১ সালে নাগপুর জেলে কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে মারা যান। অভিযুক্তরা সকলেই নিম্ন আদালতের ২০১৫ -এর রায়কে চ্যালেঞ্জ করে বম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।

সোমবার বম্বে হাইকোর্টে ছিল সেই মামলার শুনানি। শুনানিতে বিচারপতি অনিল কিলোর এবং বিচারপতি শ্যাম চন্দকের বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত প্রমাণের অভাব রয়েছে। তাই সকলকে বেকসুর খালাস করা হল। আদালতের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযুক্তেরা যদি অন্য কোনও মামলায় যুক্ত না থাকেন, তবে তাদের জেল মুক্তি দেওয়া হবে।

সোমবার শুনানিতে আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘‘অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা প্রমাণ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন মামলাকারীরা। শুধুমাত্র সন্দেহর কারণে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। এটা বিশ্বাস করা কঠিন যে অভিযুক্তরাই অপরাধটি করেছিলেন। ফলে আগে যা নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তা সব খারিজ করে দেওয়া হল”।

হাইকোর্ট তদন্তের বিভিন্ন প্রক্রিয়াগত ত্রুটি তুলে ধরে জানায়, মূল সাক্ষ্যদাতাদের বক্তব্য ছিল অসংলগ্ন ও অবিশ্বস্ত। অভিযুক্তদের থেকে স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়েছিল নির্যাতনের মাধ্যমে - যা প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। আরডিএক্স এবং অন্যান্য বিস্ফোরক উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রমাণের সংরক্ষণ ও পরিবহনে গুরুতর ত্রুটি ছিল।

বম্বে হাইকোর্টের এই নির্দেশকে 'মর্মান্তিক' বলে বর্ণনা করে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ বলেছিলেন, "আমি সম্পূর্ণ আদেশটি (হাইকোর্টের) পর্যালোচনা করব। আমি আইনজীবীদের সাথে আলোচনা করেছি। রায়কে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করা হবে"।

এরপরেই এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় এটিএস। মামলাটি দ্রুত শোনার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানান কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা। আগামী বৃহস্পতিবার মামলাটি শুনতে রাজি হয়েছেন প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাইয়ের বেঞ্চ।

উল্লেখ্য, ২০০৬ সালের ১১ জুলাই মাত্র ১১ মিনিটের মধ্যে মুম্বাইয়ে বেশ কয়েকটি লোকাল ট্রেনে বিস্ফোরণ হয়। যার ফলে নিহত হয়েছিলেন ১৮৯ জন। আহত হন ৮০০-এরও বেশি মানুষ। ৬টা ২৪ ইনিট নাগাদ প্রথম বিস্ফোরণটি হয়। অফিস থেকে বাড়ি ফেরত ভিড়ের মধ্যে দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি হয় ৬টা ৩৫ মিনিটে। চার্চগেট থেকে আসা ট্রেনগুলিতে বিস্ফোরণ হয় মোট ৬টি স্টেশনে।

মুম্বাই ট্রেন হামলা
Jagdeep Dhankhar: স্বাস্থ্যজনিত কারণ নাকি অন্য কিছু? জগদীপ ধনখড়ের আচমকা ইস্তফায় প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলে
মুম্বাই ট্রেন হামলা
Chanda Kochhar: ৬৪ কোটির ঘুষকান্ড, ট্রাইব্যুনালে দোষী সাব্যস্ত ICICI Bank-র প্রাক্তন CEO ছন্দা কোচার

SUPPORT PEOPLE'S REPORTER

ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in