রাতভর বৃষ্টির পর সোমবার সকালেও মুম্বাইতে অব্যাহত ঝড়বৃষ্টি। যার জেরে কার্যত জলমগ্ন বাণিজ্যনগরী। ব্যাহত যান চলাচল, বিমান পরিষেবা। কুরলা, সিওন, দাদর এবং পারেলের নিচু এলাকাগুলিতে বিপর্যস্ত জনজীবন। যার জেরে রাস্তা দিয়ে কোনও মতেই চলছে যানবাহন। এই খবর লেখার সময় পর্যন্ত মুম্বাইতে বৃষ্টি অব্যাহত।
মৌসম ভবনের দেওয়া তথ্য অনুসারে, সোমবার সকাল ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে মুম্বাইয়ের নরিমান পয়েন্ট এলাকায় ৪০ মিলিমিটার, গ্রান্ট রোডে ৩৬ মিমি, কোলাবায় ৩১ মিমি এবং বাইকুল্লায় ২১ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে। মুম্বাইয়ের পূর্ব ও পশ্চিম শহরতলিতে ভাল রকমের বৃষ্টি হয়েছে।
আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আগামী দু থেকে চার ঘন্টার মধ্যে মহারাষ্ট্রের কিছু জেলায় ৪০-৫০ কিলোমিটার ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বজ্রপাত এবং ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। মুম্বাই, থানে এবং পালঘরে দিনভর বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এই জেলাগুলিতে হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এছাড়া রায়গড়, রত্নগিরি এবং সিন্ধুদুর্গ জেলায় অতি ভারী বৃষ্টিপাতের জন্য 'কমলা' সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
বৃষ্টির জেরে মুম্বাইগামী এবং মুম্বাই থেকে আসা কয়েকটি বিমান চলাচল ব্যাহত হয়েছে। যাত্রীদের বিবৃতি সতর্ক করেছে এয়ার ইন্ডিয়া, স্পাইসজাটের মতো বিমান সংস্থাগুলি। বিমানবন্দরে যাওয়ার আগে অবস্থা পরীক্ষার জন্য যাত্রীদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে বিমান সংস্থাগুলি।
অন্যদিকে, অনবরত বৃষ্টির ফলে জলের তলায় একাধিক রেললাইন। যার জেরে বিলম্বিত ট্রেন পরিষেবা। বেশির ভাগ ট্রেন নির্ধারিত সময়ের পাঁচ থেকে দশ মিনিট দেরিতে চলছে। তবে বর্তমানে স্বাভাবিক হয়েছে বলেই জানানো হয়েছে আধিকারিকদের পক্ষ থেকে। আচার্য আত্রে চক এবং ওরলির মধ্যে মুম্বাই মেট্রো লাইন ৩-এর চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। বৃষ্টির কারণে ভূগর্ভস্থ স্টেশন জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।
গত ৩৫ বছরে এই প্রথম বার মহারাষ্ট্রে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রবেশ করেছে। যার জেরে জলযন্ত্রণা ভোগ করছেন মুম্বইবাসী। বৃহন্নুম্বাই পৌর কর্পোরেশন (বিএমসি) মুম্বাইয়ের বাসিন্দাদের জরুরি প্রয়োজন ছাড়া তাদের ঘর থেকে বের না হওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে।
এছাড়া বাসিন্দাদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে বৃহন্মুম্বই পুরনিগম (বিএমসি) এবং মহারাষ্ট্র আবাসন ও অঞ্চল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এমএইচডিএ) বর্ষায় শহরের ৯৬টি বাড়িকে ‘বিপজ্জনক’ বলে চিহ্নিত করে ৩,১০০-রও বেশি বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। রাজ্য প্রশাসন নাগরিকদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
সোমবার সকালে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে বারামতীর দুর্যোগ কবলিত স্থান পরিদর্শনে গিয়েছিলেন রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার। এছাড়া মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিস এবং উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের তরফ থেকে রাজ্যের সমস্ত নিরাপত্তা সংস্থাকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন