

যে সমস্ত হিন্দুরা মাংস খায়, তাঁদের চিকিৎসা করানো উচিত বলে মন্তব্য করলেন আর.এস.এস প্রধান মোহন ভাগবত (Mohan Bhagwat)। শুধু তাই নয়, সরকারের এই বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগ নেওয়া উচিত বলেও মনে করেন তিনি।
সংগঠনের ১০০ বছর উদযাপন উপলক্ষ্যে বেঙ্গালুরুতে পিইএস বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক কর্মসূচীতে বক্তৃতা রাখার সময় হিন্দুদের খাদ্যাভ্যাস প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মোহন ভাগবত বলেন, “সরকারি পলিসিতে নিরামিষ ভোজকে প্রজেক্ট করা উচিত। হয়তো আমাদের একটি বিরাট পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হবে কারণ আমাদের সমাজে, হিন্দু সমাজে, ৭২ শতাংশ মানুষ মাংস খান।… সাধারণত বুধবার এবং রবিবার তারা মাংস খায়। তাই সম্ভব হলে প্রথমে আমাদের এটির চিকিৎসা করতে হবে।"
ভাগবত বলেন, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম এবং ওড়িশায় মাছকে "জলের ফল" হিসেবে বিবেচনা করা হয়, আমিষ খাবার হিসেবে নয়। তিনি বলেন, মাছ খাওয়ার অভ্যাস তখন থেকেই শুরু হয়েছিল যখন ছোলা, ডাল ইত্যাদির উৎপাদন ছিল না। তখন "প্রোটিনের অন্য কোনও উৎস ছিল না, তাই ঐতিহ্যগতভাবে তারা মাছ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলেছিল। এখন পরিস্থিতি বদলে গেলেও, অভ্যাস বদলায়নি।" তিনি বলেন।
ভারত সরকার কেন গো-মাংস রপ্তানির অনুমতি দেয়, সেই প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, সরকার তাঁকে আশ্বস্ত করেছে যে এটি মহিষের মাংস।
তিনি আরও জানান, আরএসএস কোনও নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না। যে দল তাদের কর্মসূচী বাস্তবায়নে সহায়তা করবে, সেই দলকে তাঁরা সমর্থন করবে। তিনি বলেন, “আমরা কোনও রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করি না। আমরা নির্বাচনী রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করি না। সংঘ সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য কাজ করে, কিন্তু রাজনীতি বিভেদ তৈরি করে। আমরা কেবল নীতিগুলিকে সমর্থন করি।“
উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন, “আমরা অযোধ্যায় রাম মন্দির চেয়েছিলাম। যারা এর নির্মাণে এগিয়ে এসেছে, আমাদের স্বয়ংসেবকরা তাদের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। কংগ্রেস যদি এটি করত, তাহলে আমাদের স্বয়ংসেবকরা তাদের ভোট দিত।“
আরএসএস প্রধান বলেন, "আমাদের নির্দিষ্ট কোনও দলের প্রতি বিশেষ আকর্ষণ নেই।… সমস্ত দলই আমাদের কারণ সবগুলিই ভারতীয় দল। আমরা রাষ্ট্রনীতি সমর্থন করি, রাজনীতি-কে নয়। আমাদের একটি দৃষ্টিভঙ্গি আছে, যারা দেশকে সেই দিকে নিয়ে যাবে, আমরা তাদের সমর্থন করব।”
মুসলিমরা আরএসএস-এর অংশ নিতে পারবে কিনা জানতে চাইলে ভাগবত উত্তর দেন, "কোনও ব্রাহ্মণকে সংঘে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না, কোনও বর্ণের কাউকে অনুমতি দেওয়া হয় না, কোনও মুসলিম বা খ্রিস্টানকেও অনুমতি দেওয়া হয় না... কোনও মুসলিম, খ্রিস্টান বা ব্রাহ্মণকে সঙ্ঘে আসতে গেলে তাঁদের অন্যান্য পরিচয়কে দূরে রেখে আসতে হবে। তখন আপনি কেবল ভারতমাতার সন্তান।"
কেন আরএসএস একটি নিবন্ধিত সংগঠন নয়? - কংগ্রেস একাধিকবার এই প্রশ্ন তুলেছে। এদিন এই প্রশ্নের অদ্ভুত যুক্তি দেন সংঘ প্রধান। তিনি বলেন, "সংঘের সূচনা হয় ১৯২৫ সালে। আপনারা কি আশা করেন যে আমরা ব্রিটিশ সরকারের কাছে নিবন্ধন করব? স্বাধীনতার পর, আইনে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়নি। 'ব্যক্তিদের সংগঠন'-কেও আইনি মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। আমাদের ব্যক্তিদের সংগঠন হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয় এবং আমরা একটি স্বীকৃত সংগঠন। আমাদের তিনবার নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। আমরা যদি না-ই থাকতাম, তাহলে কাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল? প্রতিবারই আদালত নিষেধাজ্ঞা বাতিল করেছে।... আমরা অসাংবিধানিক নই, তাই আমাদের নিবন্ধনের প্রয়োজন নেই। অনেক কিছু নিবন্ধিত নয়। এমনকি হিন্দু ধর্মও নিবন্ধিত নয়।"
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন