

২.১ শতাংশের নীচে জন্মহার কমে গেলে হবে জাতির বিলুপ্তি। সে কারণে তিন সন্তান নেওয়ার নিদান দিয়েছেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। সঙ্ঘ প্রধানের এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিরোধীরা। বিরোধীদের প্রশ্ন, অতিরিক্ত সন্তান জন্ম দিলে, সেই সন্তানের প্রতিপালনের খরচ দেবে কে?
কংগ্রেস সাংসদ রেনুকা চৌধুরী বলেন, ‘যদি আরও বেশী সন্তানের জন্ম দিতে হয়, তাহলে সরকার স্কুল ফি, স্কুলে পড়ার খরচ-সহ অন্য বিষয়ের খরচ আরও কমাক। দেশে বেকারি ভয়ঙ্কর জায়গায়, এই অবস্থায় কেন এক জন তিনটি সন্তানের জন্ম দেবেন, সেটা আগে ব্যাখ্যা করুন সঙ্ঘপ্রধান।‘
এই প্রসঙ্গে এক সংবাদমাধ্যমেও সরব হয়ে তিনি বলেন, আমরা কি খরগোশ যে আমরা প্রজনন চালিয়েই যাব? যারা এর পক্ষে কথা বলছেন, তারা ক'টা বাচ্চা মানুষ করতে পারবেন? তাদের অভিজ্ঞতা কী? আমরা জানি।"
এই দাবি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আজাদ সমাজ পার্টির প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ। তাঁর প্রশ্ন, ‘অতিরিক্ত জনসংখ্যার জন্য সম্পদ কোথা থেকে আসবে? এই ধরণের বিবৃতি দেওয়া হচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপূরণের জন্য। আর মূল্য চোকাতে হবে জনগণকে। যদিও আমরা উৎপাদন করতে পারি, তাহলে লোককে কাজ দেওয়া যায়। কিন্তু সরকার তা করত ব্যর্থ।‘
মোহন ভাগবতের এই নিদান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এনসিপি শরদ পাওয়ার গোষ্ঠীর নেতা জীতেন্দ্র আওহাদ। তিনি বলেন, ‘আপনি যা খুশি বলতে পারেন। কিন্তু সন্তানের দায়িত্ব কে নেবে? তাঁদের খাওয়াবে কে? স্কুলে ভর্তি করবে কে? আমাদের সেই পরিমাণ সম্পদ আছে? ভারত কি এতটাই ধনী?’ জীতেন্দ্রর দাবি, ‘যে মহিলারা ঘরে থাকেন, সংসার চালান, তাঁরা দুনিয়ার যে কারো থেকে অর্থনীতিটা ভালো বোঝেন।‘ জীতেন্দ্রর কটাক্ষ, ‘একজনের কটা সন্তান থাকবে সেটা মানুষের ব্যক্তিগত ব্যাপার, স্বামী-স্ত্রীকে স্থির করতে দিন।‘
এনসিপি শরদ পাওয়ারের মহারাষ্ট্র রাজ্য সভাপতি জয়ন্ত পাটিল বলেন, ‘জনসংখ্যা হার বৃদ্ধি হলে দেশের পরিস্থিতি কী হবে সেটা অনুমান করতে পারছেন না! এখনই জনসংখ্যার হার অতিরিক্ত। আরও বৃদ্ধি হলে খাবার, জল ও অনেক কিছুর সংস্থান হবে না।‘ এরপরেই তিনি কটাক্ষ করে বলেন, ‘সুযোগ পেলে আমি ওঁদের থেকে বোঝার চেষ্টা করব, যে কেন ওঁরা হঠাৎ এই দাবি করছেন!’
মোহন ভাগবতের নিদানের তীব্র আক্রমণ করে কংগ্রেস নেতা তারিক আনওয়ার বলেন, ‘এই সমস্ত করা হচ্ছে সমাজকে বিভাজিত করার জন্য। যাতে সমাজের ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হতে না পারে। ভাগবত হোন বা সঙ্ঘ পরিবার, এদের সমস্ত পদক্ষেপের লক্ষ্য এটাই।‘
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন