
জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার যেন ২.১ শতাংশ নীচে না যায়। তাহলে জাতির অবলুপ্তি ঘটবে। এক গবেষণাতে নাকি এমনই উল্লেখ করা হয়েছে বলে দাবি করলেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। তাই প্রত্যেক পরিবারকে তিন সন্তান জন্ম দেওয়ার নিদান দিয়েছেন তিনি। যদিও এদিন তিনি কোনও ধর্মের কথা উল্লেখ করেননি। তবে তিনি হিন্দুদের কথাই বলতে চেয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। আর এ নিয়ে বেশ উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
রবিবার নাগপুরের এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত। সেই অনুষ্ঠান থেকে তিনি বলেন, ‘জনসংখ্যা বৃদ্ধি না হলে সমাজ ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। জনসংখ্যা বিজ্ঞানের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হচ্ছে, কোনও জাতির জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ২.১ –এর নীচে নেমে গেলে সেই সমাজের অবলুপ্তি ঘটে। আলাদা করে বাইরে থেকে কোনও আক্রমণের প্রয়োজন নেই। একা একাই ধ্বংস হয়ে যাবে ওই জাতি। এর আগেও বহু ভাষা ও সভ্যতা এ ভাবে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। সে জন্য জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কখনওই ২.১ –এর কম হওয়া উচিত নয়। তাই প্রত্যেক পরিবারের উচিত দুইয়ের বেশি, অর্থাৎ কমপক্ষে তিনটি করে সন্তান নেওয়া। জনসংখ্যার ভারসাম্য বজায় থাকলে সমাজও স্থিতিশীল থাকবে। ‘
এর আগে ২০২২ সালের জুলাই মাসে কর্ণাটকের শ্রী সত্য সাই বিশ্ববিদ্যালয়ের দীক্ষান্ত সমারোহে অংশ নিয়ে মোহন ভাগবত বলেছিলেন, 'খাওয়া এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির কাজ তো পশুরাও করে। শক্তিশালীরাই বেঁচে থাকবে এটাই জঙ্গলের নিয়ম। মানুষের মধ্যে শক্তিশালীরা অন্যদের রক্ষা করে।'
তার আগে ২০২১ সালে বিজয়া দশমীতে ভাষণ দেওয়ার সময় মুসলিমদের আক্রমণ করে সঙ্ঘ প্রধান বলেছিলেন, ১৯৫১-২০১১ সালের মধ্যে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারে গভীর পার্থক্যের কারণে ভারতে উৎপন্ন ধর্মগুলির অনুগামীদের অনুপাত ৮৮ শতাংশ থেকে কমে ৮৩.৮ শতাংশ হয়ে গেছে। সেখানে মুসলিম জনসংখ্যার শতাংশ ৯.৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১৮.২৪ শতাংশ।
মোহন ভাগবতের এহেন মন্তব্য প্রকাশ্যে আসার পরেই তাঁকে তীব্র কটাক্ষ করেন ওয়েইসি। তিনি বলেন, ‘আমি মোহন ভাগবতের কাছে জানতে চাই, যারা বেশী সন্তানের জন্ম দেবেন তাঁদের কি উপহার দেওয়া হবে? যেমনটা ‘লাডলি বহেন’ প্রকল্পে দেওয়া হয়। এই নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কী কোনও প্রকল্প আনা হচ্ছে? এগুলি স্পষ্টভাবে জানানো উচিত ভাগবতের।‘
ওয়েইসি আরও বলেন, ‘টিএফআর রেট শুধু হিন্দুদের ক্ষেত্রে কমেনি। সব সম্প্রদায়ের কমেছে। ধর্মের হিসেবে সবেচেয়ে বেশী টিএফআর কমেছে মুসলিমদের। আমার ৬ সন্তান রয়েছে এটা আমি আগেই জানিয়েছি। নরেন্দ্র মোদিরও ৬ ভাই, অমিত শাহেরও ৬ ভাই।‘
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন