
আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়া বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত এখনও চলছে। এর মধ্যেই বহু খবর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে প্রকাশ্যে আসছে। যা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী রাম মোহন নাইডু। তিনি সকলকে শান্ত থাকার এবং ধৈর্য ধরার আবেদন জানিয়েছেন।
রাজ্যসভায় মন্ত্রী রাম মোহন নাইডু বলেন, "তদন্তের স্বচ্ছতা বজায় রাখতেই এখন আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে। আমরা তথ্যের ভিত্তিতে এগোতে চাই এবং সত্যই হবে আমাদের চূড়ান্ত দিকনির্দেশনা।"
বিমান দুর্ঘটনায় মোট ২৭৪ জন নিহত হন। প্রাথমিক তদন্তে বিমানটির জ্বালানি নিয়ন্ত্রণ সুইচ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, যা 'রান' থেকে 'কাটঅফ' অবস্থানে চলে যাওয়ায় ইঞ্জিনে শক্তির অভাব দেখা দেয় বলে জানা গেছে।
মন্ত্রী বলেন, "দুর্ঘটনা সম্পর্কে একাধিক তত্ত্ব ভেসে উঠছে। তবে আমাদের উচিত তদন্ত প্রক্রিয়াকে সম্মান করা। AAIB (বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো) স্বচ্ছভাবে তদন্ত পরিচালনা করছে। আমরা সত্যের পক্ষে দাঁড়াতে চাই।"
মন্ত্রী আরও জানান, শুধু দেশীয় সংবাদমাধ্যম নয়, পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমগুলিও নানা অনুমানমূলক প্রতিবেদনের মাধ্যমে ঘটনার দৃষ্টিভঙ্গি প্রভাবিত করতে চেয়েছে।
দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ নিয়ে মার্কিন দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ককপিট ভয়েস রেকর্ডিং থেকে জানা গেছে, প্রথম অফিসার ক্লাইভ কুন্দ্রা ক্যাপ্টেন সাভারওয়ালকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন কেন জ্বালানি সুইচ সরানো হয়েছে? ক্যাপ্টেন বিষয়টি অস্বীকার করেন। যদিও এই রেকর্ডিং প্রকাশিত হয়নি। এটি ইতিমধ্যেই প্রবল আলোচনার সৃষ্টি করেছে।
এই ধরনের "অনুমানভিত্তিক" রিপোর্টিংয়ের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে AAIB এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পরিবহন সুরক্ষা বোর্ড (NTSB)। AAIB এক বিবৃতিতে জানায়, "এমন কর্মকাণ্ড দায়িত্বজ্ঞানহীন, বিশেষ করে যখন তদন্ত চলছে। আমরা সংবাদমাধ্যমকে এমন প্রচার থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি যা তদন্ত প্রক্রিয়ার অখণ্ডতাকে ক্ষুণ্ন করতে পারে।"
NTSB-র প্রধান জেনিফার হোমেন্ডি বলেন, “তদন্ত শেষ হওয়ার আগে অনুমানমূলক প্রতিবেদন শুধু বিভ্রান্তিই ছড়ায়।”
দুর্ঘটনার পর বোয়িং তাদের 787-8 ড্রিমলাইনারের জ্বালানি সরবরাহ সুইচ সম্পর্কিত নকশা ও কার্যকারিতা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। বোয়িং জানিয়েছে, সুইচগুলো স্বাভাবিকভাবে ‘স্প্রিং-লোড’ করা থাকে এবং পাইলট ইচ্ছাকৃতভাবে না সরালে সেগুলি নড়ার কথা নয়।
ভারতের অসামরিক বিমান পরিবহনের ডিরেক্টর জেনারেল (সিভিল এভিয়েশনের মহাপরিচালক) জানিয়েছেন, দেশজুড়ে নিবন্ধিত সমস্ত বোয়িং বিমানে এই সংক্রান্ত পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে যে তারা ইতিমধ্যেই সমস্ত সুইচ পরীক্ষা করেছে এবং “কোনও সমস্যা” খুঁজে পায়নি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন