
উত্তরপ্রদেশে ‘অ-ব্রাহ্মণ’ কথকের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনার মধ্যেই বিতর্কিত মন্তব্য করলেন সমাজবাদী পার্টির (SP) সাংসদ অখিলেশ যাদব। তাঁর নিশানায় এবার বাগেশ্বর ধামের প্রধান পুরোহিত ধীরেন্দ্রকৃষ্ণ শাস্ত্রী ওরফে বাগেশ্বর ধাম সরকার ওরফে বাগেশ্বর বাবা। তাঁকে কটাক্ষ করে অখিলেশ বলেন, অনেক কথক আছেন যাঁরা লক্ষ লক্ষ টাকা নেন। ইতিমধ্যেই অখিলেশ যাদবের (Akhilesh Yadav) এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিজেপি সাংসদ প্রবীণ খান্ডেলওয়াল। সমাজবাদী পার্টির প্রধানের এই বক্তব্যকে তিনি 'হিন্দু বিরোধী' বলেও আখ্যা দিয়েছেন।
সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের এটাওয়াতে (Etawah) এক কথকের ওপর আক্রমণের ঘটনা সংবাদ শিরোনামে এসেছে। জানা গেছে, ওই কথক যাদব সম্প্রদায়ের হওয়ায় তাঁকে হেনস্থা করা হয়। এই আবহে অখিলেশ যাদব সাংবাদিকদের বলেন, “অনেক কথক একটি অনুষ্ঠানের জন্য ৫০ লক্ষ টাকা নেন। কেউ কি তাঁদের বাড়িতে ধর্মীয় বক্তব্য রাখার জন্য ধীরেন্দ্র শাস্ত্রীর খরচ বহন করতে পারবেন? তিনি টেবিলের নীচ দিয়ে টাকা নেন”।
পাশাপাশি অখিলেশ এও বলেন, বাগেশ্বর বাবা ধর্মীয় কথা বলার জন্য ঠিক কত টাকা নেন তিনি জানেন না। তবে বিনামূল্যে কোনও অনুষ্ঠানে আচার্য ধীরেন্দ্র শাস্ত্রী বক্তব্য রাখেন না বলেই দাবি সমাজবাদী পার্টির সাংসদের।
মধ্যপ্রদেশের বুন্দেলখণ্ড অঞ্চলের ছতরপুরে অবস্থিত বাগেশ্বর ধাম। ভক্তদের দাবি, বাগেশ্বর বাবার মধ্যে অলৌকিক ক্ষমতা আছে। এই বাগেশ্বর ধামে ঘুরে গেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। সেখানে গত ফেব্রুয়ারি মাসে ‘বাগেশ্বর ধাম মেডিক্যাল অ্যান্ড সায়েন্স রিসার্চ ইনস্টিটিউট’-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। শুধু প্রধানমন্ত্রীই নন, একাধিক তারকা ক্রিকেটার ও বলিউড তারকাদেরও বাগেশ্বর বাবার কাছে যেতে দেখা গেছে।
প্রসঙ্গত, গত ২২ জুন উত্তরপ্রদেশের এটাওয়াতে এক কথককে মারধোর করা হয়। তিনি ব্রাহ্মণ না হওয়ার কারণে উচ্চবর্ণের হাতে আক্রান্ত হন। আক্রান্ত মুকুটমণি সিং যাদব কানপুরের বাসিন্দা। মুকুটমণির অভিযোগ, অভিযুক্তরা তাঁকে জুতোপেটা করে, জোর করে মাথা কামিয়ে দেয় তাঁর। এরপর গ্রামবাসীদের সামনে নতজানু হয়ে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করে। এক মহিলার পায়ে নাক ঘষতে বলা হয় তাঁকে। এমনকি হামলাকারীরা তাঁর কাছ থেকে ২৫,০০০ টাকা ও একটি সোনার হারও ছিনিয়ে নেয় বলে তিনি জানান। ঘটনায় আশিস তিওয়ারি, উত্তম কুমার অবস্থি, নিকি অবস্থি এবং মনু দুবে এই চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ঘটনার কড়া নিন্দা করেন সমাজবাদী পার্টির সাংসদ অখিলেশ যাদব। এক্স মাধ্যমে তিনি লেখেন, “সংবিধান জাতপাতের ভিত্তিতে কোনো বৈষম্যের অনুমতি দেয় না। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত”। ওই কথককে সমাজবাদী পার্টির পক্ষ থেকে কিছু আর্থিক সাহায্যও করা হয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন