
মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে এন বীরেন সিং-র পদত্যাগ করাকে তীব্র কটাক্ষ করল কংগ্রেস। দেশের প্রধান বিরোধী দলের দাবি, অনাস্থা ভোটে হারবে জেনেই আগে থেকে ইস্তফা দিয়েছেন এন বীরেন সিং।
রবিবার মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন এন বীরেন সিং। নিজের পদত্যাগপত্র তুলে দেন রাজ্যপাল অজর কুমার ভাল্লার হাতে। বীরেন সিং জানান, 'মণিপুরের জনগণের সেবা করতে পেরে আমি খুব গর্বিত। রাজ্যের মানুষের জন্য কেন্দ্র যে সকল জনকল্যাণমুখী প্রকল্প প্রদান করেছে তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ'।
এই নিয়ে লোকসভার বিরোধী দলনেতা এবং রায়বেরেলি কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী নিজের এক্স মাধ্যমে লিখেছেন: "প্রায় দুই বছর ধরে, বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং মণিপুরে বিভাজন উস্কে দিচ্ছিলেন। মণিপুরে সহিংসতা, প্রাণহানি হওয়া সত্ত্বেও, এমনকি ভারতের ধারণা-ভিত্তি ধ্বংস হওয়া সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁকে দায়িত্ব পালন করতে দিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং-এর পদত্যাগ এটাই প্রমাণ করে যে ক্রমবর্ধমান জনসাধারণের চাপ, সুপ্রিম কোর্টের তদন্ত এবং কংগ্রেসের অনাস্থা প্রস্তাবের ফলে উনি হিসাব-নিকাশ করে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।"
কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ এক্স মাধ্যমে লেখেন, 'কংগ্রেস আগামীকাল (সোমবার) মণিপুর বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর মন্ত্রী পরিষদের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার জন্য প্রস্তুত ছিল। আগে থেকে পরিস্থিতি বুঝতে পেরেই তিনি ইস্তফা দিয়েছেন। ২০২৩ সালের মে মাসের প্রথম দিকে, যখন মণিপুরের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে তখন থেকেই কংগ্রেস তাঁর পদত্যাগ দাবি করেছে।'
তিনি আরও লেখেন, 'অনেক দেরিতে মুখ্যমন্ত্রী ইস্তফা দিলেন। মণিপুরের জনগণ এখন আমাদের ভ্রমণকারী প্রধানমন্ত্রীর সফরের অপেক্ষায় আছেন যিনি এখন ফ্রান্স এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন। কিন্তু গত ২০ মাসে মণিপুরে যাওয়ার সময় বা ইচ্ছা কিছুই হয়নি তাঁর'।
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেও এন বীরেন সিং-র পদত্যাগ নিয়ে সরব হয়েছেন। তিনি লেখেন, 'গত ২১ মাস ধরে রাজধর্মের অবজ্ঞার ফলে কমপক্ষে ২৫৮ জন নিহত হয়েছেন। ৫,৬০০টির বেশি অস্ত্র এবং ৬.৫ লক্ষ রাউন্ড গুলি পুলিশ অস্ত্রাগার থেকে লুট করা হয়েছে। ৬০,০০০ জনেরও বেশি মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন এবং এখনও হাজার হাজার মানুষ ত্রাণ শিবিরে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন'।
তাঁর অভিযোগ, এই ঘটনার জন্য দায়ী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি এই অবজ্ঞা এবং উদাসীনতার আসল অপরাধী। তিনি ভুলে গেছেন যে মণিপুর ভারতের একটি অংশ। মোদীজি ২০২২ সালের জানুয়ারিতে তাঁর শেষ নির্বাচনী প্রচারণার পর থেকে মণিপুরের মাটিতে পা রাখেননি।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের মে মাস থেকে মেইতেই এবং কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মণিপুর। এই হিংসার ফলে সে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ২৫০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বাড়ি ছাড়া হয়েছেন বহু মানুষ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন