
উপরাষ্ট্রপতি পদ থেকে জগদীপ ধনখড়ের আচমকা পদত্যাগ নিয়ে দেশজুড়ে জল্পনা চলছে। কংগ্রেস সভাপতি তথা রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে বুধবার সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, “ডাল মে কুছ কালা হ্যায়”। পাশাপাশি দাবি করেন যে পদত্যাগের পেছনে “গভীর কোনো কারণ” লুকিয়ে রয়েছে।
সংবাদমাধ্যমে খাড়গে বলেন, “সরকারের উচিত ধনখড়ের পদত্যাগের প্রকৃত কারণ স্পষ্ট করা। আমি দেখছি, তাঁর স্বাস্থ্য ভালো রয়েছে। তিনি সবসময় আরএসএস ও বিজেপির ঘনিষ্ঠ ছিলেন। হঠাৎ করে পদত্যাগ কেন? দেশবাসীর জানা উচিত এর পিছনে কে এবং কী রয়েছে।” উল্লেখ্য, পদত্যাগের কয়েক ঘণ্টা আগেও অধ্যক্ষ হিসেবে দীর্ঘ সময় রাজ্যসভার অধিবেশন পরিচালনা করেছেন ধনখড়। তাই স্বাস্থ্যজনিত কারণে তাঁর এই ইস্তফা সকলের মনেই প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে।
অন্যদিকে, কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ট্যুইটের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, “একটি সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তির সম্মান রক্ষা করা উচিত তাঁর দায়িত্ব পালনের সময় এবং পদত্যাগের পরও। প্রধানমন্ত্রীর ট্যুইট স্পষ্ট করে দিয়েছে যে এই পদত্যাগের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট রয়েছে।”
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মঙ্গলবার X-এ একটি পোস্টে লেখেন, “শ্রী জগদীপ ধনখড়জি ভারতের উপরাষ্ট্রপতি সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে দেশের সেবা করেছেন। তাঁর সুস্থতা কামনা করি।”
বিরোধী পক্ষ মনে করছে, এই পদত্যাগ শুধুমাত্র স্বাস্থ্যগত কারণে নয়, বরং এর অন্তর্নিহিত রাজনৈতিক জটিলতা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, সোমবার রাতে আচমকাই উপরাষ্ট্রপতি পদ থেকে ইস্তফা দেন জগদীপ ধনখড়। ২০২২ সালে অগস্ট মাসে উপরাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্বগ্রহণ করেছিলেন ধনখড়। বিরোধী প্রার্থী মার্গারেট আলভাকে ৩৪৬ ভোটে হারিয়ে ছিলেন তিনি।
৭৪ বছরের এই রাজনীতিবিদ রাষ্ট্রপতিকে লেখা ইস্তফাপত্রে লেখেন, "নিজের স্বাস্থ্যকে প্রাধান্য দিতে চাই আমি। তাই চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে চলার জন্য সংবিধানের ৬৭(ক) অনুচ্ছেদ অনুসারে ভারতের উপরাষ্ট্রপতি পদ থেকে পদত্যাগ করছি।"
সংবিধানের ৬৮(২) ধারা অনুযায়ী, উপরাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হওয়ার পর “যত তাড়াতাড়ি সম্ভব” নির্বাচন আয়োজনের নির্দেশ রয়েছে। ইতিমধ্যেই নির্বাচনের অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনের দিনক্ষণ শীঘ্রই ঘোষণা করা হবে। নতুন নির্বাচিত উপরাষ্ট্রপতি ৫ বছরের পূর্ণ মেয়াদেই পদে থাকবেন।
এই মুহূর্তে হরিবংশ নারায়ণ সিং উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে এগিয়ে রয়েছেন। জনতা দল (ইউনাইটেড)-এর এই নেতা রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন। ২০২০ সাল থেকে পদে রয়েছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন