বিরোধীদের লাগাতার প্রতিবাদের জের, হিন্দিকে তৃতীয় ভাষা করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার মহারাষ্ট্র সরকারের!

People's Reporter: গত ১৬ এপ্রিল রাজ্য সরকার 'স্কুল শিক্ষার পাঠ্যক্রম কাঠামো ২০২৪'-এর মাধ্যমে হিন্দিকে তৃতীয় ভাষা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দেয়।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ ফাইল ছবি সংগৃহীত
Published on

বিরোধীদের লাগাতার প্রতিবাদের মধ্যেই প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ত্রি-ভাষা চালু করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করল মহারাষ্ট্র সরকার। সরকার জনগণের চাপে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে বলেই দাবি বিরোধীদের।

২৯ জুন সাংবাদিক সম্মেলনে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ জানান, জাতীয় শিক্ষা নীতির (NEP) আওতায় ত্রি-ভাষা সূত্র কার্যকর করার বিষয়ে মতামত নেওয়ার জন্য শিক্ষাবিদ ও প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ নরেন্দ্র যাদবের নেতৃত্বে একটি নতুন বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই কমিটি সরকারকে সাহায্য করবে কোন শ্রেণি থেকে ত্রি-ভাষা বাস্তবায়ন করা হবে।

তিনি আরও বলেন, “উদ্ধব ঠাকরে মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন তিন ভাষার সূত্র গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। আমরা কেবল সেই সিদ্ধান্তেরই বাস্তবায়ন করছিলাম। এখন তারাই হিন্দির বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছেন অথচ ইংরেজিকে সহজেই মেনে নিয়েছেন।”

মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস) প্রধান রাজ ঠাকরে এক্স মাধ্যমে লেখেন, “প্রথম শ্রেণি থেকে তিনটি ভাষা শেখানোর নামে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত প্রত্যাহার হয়েছে। এটিকে বিলম্বিত বোধোদয় বলা যায় না; এটি কেবলমাত্র মারাঠি জনমতের চাপে সরকারের পিছু হটা।”

গত ১৬ এপ্রিল রাজ্য সরকার 'স্কুল শিক্ষার পাঠ্যক্রম কাঠামো ২০২৪'-এর মাধ্যমে হিন্দিকে তৃতীয় ভাষা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দেয়। পাশাপাশি, মারাঠি ভাষাকে বাধ্যতামূলক করা হয়। মহারাষ্ট্র সরকারের এই  সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে লাগাতার বিক্ষোভ দেখায় বিরোধীরা। বিরোধীরা অভিযোগ তোলে, হিন্দিকে জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার একটি উদ্যোগ।

পরে ১৭ জুন, রাজ্য সরকার একটি সংশোধনী জারি করে জানায় যে, হিন্দি বাধ্যতামূলক নয় এবং শিক্ষার্থীরা যেকোনো ভারতীয় ভাষা তৃতীয় ভাষা হিসেবে বেছে নিতে পারবে যদি প্রতি শ্রেণিতে কমপক্ষে ২০ জন তা চায়। সেই ভাষায় দক্ষ শিক্ষক না থাকলে অনলাইন শিক্ষাদানের ব্যবস্থাও করা হবে।

অন্যদিকে, হিন্দি ভাষাকে বাধ্যতামূলক করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভা করার পরিকল্পনা ছিল বিরোধী দলগুলির। মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস) প্রধান রাজ ঠাকরে ও শিবসেনা (উদ্ধব গোষ্ঠী) যৌথভাবে ৫ জুলাই প্রতিবাদের ডাক দিয়েছিল। তবে সরকারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের পর ওই কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে।

এর আগে মহারাষ্ট্র সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরকারের দেওয়া পুরস্কার ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেন কবি হেমন্ত দিভাতে। তিনি জানিয়েছিলেন, "হিন্দিকে তৃতীয় ভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আমি আমার কাব্যগ্রন্থ "প্যারানোয়া"-এর জন্য প্রাপ্ত নগদ পুরস্কার সহ মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকারের পুরস্কার ফিরিয়ে দিচ্ছি।"

মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ
ধর্মনিরপেক্ষতা আমাদের সংস্কৃতি নয়, সমাজতন্ত্রেরও প্রয়োজন নেই - কেন্দ্রীয় মন্ত্রী
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ
Nitin Gadkari: ১৫ জুলাই থেকে বাইক-স্কুটি চালকদেরও টোল ট্যাক্স দিতে হবে? যা জানালেন নীতিন গডকড়ি

SUPPORT PEOPLE'S REPORTER

ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in