
মকর সংক্রান্তি থেকে শুরু হয়েছে প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভমেলা। চলবে ফেব্রুয়ারির শেষ পর্যন্ত। 'মোক্ষলাভের আশায়' পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পুণ্যার্থীরা আসছেন মহাকুম্ভমেলায়। ত্রিবেণী সঙ্গমের পাশাপাশি অন্যান্য গঙ্গা ঘাটে 'শাহী স্নান' সারছেন তাঁরা। তবে এবার কেন্দ্র যে রিপোর্ট পেশ করেছে তাতে ‘শাহী স্নান’-এ বাড়তে পারে বিপদ। তেমনই আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই রিপোর্টের ভিত্তিতে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে তলব করেছে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল।
জানা যাচ্ছে, প্রয়াগরাজের গঙ্গায় নিকাশি বর্জ্য থেকে তৈরি হওয়া কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়ার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি দেখা গেছে। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) –এর জমা দেওয়া রিপোর্টের পর এই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ন্যশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল (NGT)। গত ৩ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, বায়োকেমিক্যাল অক্সিজেন ডিম্যান্ড (বিওডি)-এর নিরিখে এই জল স্নানের উপযুক্ত নয়।
ইন্ডিয়া টুডে-র প্রতিবেদন অনুসারে ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ১২ থেকে ১৩ জানুয়ারি প্রয়াগরাজের ত্রিবেণী সঙ্গমের জল নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করা হয়েছে। দেখা গেছে, নদীর জলে গুণমান জৈব রাসায়নিক অক্সিজেন চাহিদা বায়োকেমিক্যাল অক্সিজেন ডিম্যান্ড (BOD)-এর মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না। বিভিন্ন সময় ওই স্থানের গঙ্গার জল পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে ফিকাল কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া বেড়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, শুধু ত্রিবেণী সঙ্গম ঘাট নয়, ওই এলাকার কোনও ঘাটই স্থানের উপযুক্ত নয়।
সিপিসিবি-এর প্রকাশিত রিপোর্টে আশঙ্কা করা হচ্ছে, বিশেষ দিনগুলিতে মহাকুম্ভে বিপুল সংখ্যক লোক গঙ্গায় স্নান করার ফলে জলে মলমূত্রের ঘনত্ব অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও এলাকায় স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (STPs) চালু ছিল। রিপোর্ট অনুযায়ী, শাহী স্নান বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানের সময় দূষণের মাত্রা অনেকটাই বেশি ছিল।
মূলত, বর্জ্য থেকে জল দূষিত হচ্ছে কিনা, সেটা বোঝা যায় ফিকাল কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি থেকে। প্রতি ১০০ মিলিমিটার জলে সর্বাধিক ২৫০০ ফিকাল কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া খুব বেশি ক্ষতিকর নয়। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের নির্ধারিত সীমায় সেটাই উল্লেখ আছে। তবে বর্তমানে গঙ্গায় ঠিক কত পরিমাণ ফিকাল কলিফর্ম পাওয়া গিয়েছে, তা প্রকাশ্যে আসেনি।
জাতীয় পরিবেশ আদালতের বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব কেন্দ্রের দেওয়া রিপোর্ট খতিয়ে দেখে উত্তরপ্রদেশের দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (UPPCB) -এর কাছে এর ব্যাখ্যা চেয়েছেন। বুধবার পর্ষদের আধিকারিকদের ভার্চুয়ালি হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। নদীতে দূষণ কমাতে উত্তরপ্রদেশ সরকার কী কী পদক্ষেপ করছে, তা জানতে চেয়েছে পরিবেশ আদালত।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন