
ভগবানকে কি কখনও চোর বলা যায়! যায় না। তাই শ্রীকৃষ্ণকে 'মাখনচোর' বলা যাবে না আর। জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে এক অনুষ্ঠানে গিয়ে এমনই ঘোষণা করেছেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব। এনিয়ে কটাক্ষ করেছে বিরোধী কংগ্রেস। যদিও বিরোধীদের কটাক্ষে কর্ণপাত করতে নারাজ সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর এহেন ঘোষণার পরেই শ্রীকৃষ্ণের ভাবমূর্তি বদলের কাজ শুরু করেছে তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর।
গত ১৬ আগস্ট ছিল জন্মাষ্টমী। সেই উপলক্ষ্যে একটি অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব। সেখানে গিয়ে তাঁর মন্তব্য, "ভগবানকে আবার চোর বলা যায় নাকি!’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘মাখনের হাঁড়ি ভাঙা চুরি নয়। এটা ছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে কৃষ্ণের প্রতীকী প্রতিবাদ। সেই সময়ে হাজার হাজার গরুর দুধ থেকে মাখন তৈরি করে মথুরায় পাঠানো হত। মথুরার রাজা তখন কংস। মাখনের হাঁড়ি ভেঙে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন কৃষ্ণ। গোপাল (কৃষ্ণের আর একটি নাম) রাখালদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, তোমরা মাখন খেয়ে নাও। তার পর হাঁড়ি ভেঙে ফেলো। কিন্তু মনে রেখো, একটা হাঁড়িও যেন শত্রুদের হাতে না যায়।’’ মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, কৃষ্ণ বর্ধিষ্ণু পরিবারের সন্তান ছিলেন। তাই তাঁর চুরি করার কোনও দরকার ছিল না।
মুখ্যমন্ত্রীর এহেন দাবি নিয়ে কটাক্ষ শুরু করেছে কংগ্রেস। মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার বিরোধী নেতা উমঙ্গ সিঙ্গারের দাবি, ‘‘মোহন যাদব তাঁর মতো করে ইতিহাস রচনা করতে চান। শতকের পর শতক ধরে কৃষ্ণের নানা কর্মকাণ্ড উদ্যাপন করে আসছেন ভক্তেরা। তাঁকে আদরের নাম দেওয়া হয়। এখন কি সনাতন ধর্ম নিয়ে নতুন গল্প লিখবেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী?’’
যদিও বিরোধীদের কটাক্ষ গায়ে না মেখে ইতিমধ্যেই এটা নিয়ে পরিকল্পনা শুরু করেছে মধ্যপ্রদেশের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর। জানা গেছে, কৃষ্ণ সম্পর্কে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি আনতে নানা পরিকল্পনা ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে তারা। মধ্যপ্রদেশের ৩,২২২টি মন্দিরে একটি সমীক্ষা শুরু করেছে। উদ্দেশ্য, শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে সম্বন্ধ থাকা মন্দিরগুলোকে খুঁজে বের করা। এমনকি জানা গেছে, মুখ্যমন্ত্রীর সাংস্কৃতিক বিষয়ক উপদেষ্টা শ্রীরাম তিওয়ারি ভগবত গীতার ‘সাম্প্রতিক সংস্করণ’ আনার জন্য অধস্তনদের নির্দেশ পাঠিয়েছে।
এবিষয়ে শ্রীরাম তিওয়ারি বলেন, ‘‘সাধুসন্তরাও ‘মাখনচোর’ শব্দে আপত্তি করেন। শ্রীকৃষ্ণকে এই নামে ডাকা চলে না।’’ তিনি জানান, সন্ন্যাসী, পুরোহিতেরা শ্রীকৃষ্ণকে নিয়ে বিশদ জানতে সাধারণ মানুষের কাছে হাজির হবেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন