
শিক্ষাগত যোগ্যতা সংক্রান্ত সার্টিফিকেট এবং পরীক্ষার নম্বর তথ্য অধিকার আইনের (RTI) অধীনে "ব্যক্তিগত তথ্য"-এর আওতায় পড়ে। ধারা 8(1)(j)-তে এর উল্লেখ রয়েছে। তাই কেবল জনসাধারণের কৌতূহল মেটানোর জন্য প্রকাশ করা যাবে না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডিগ্রি সংক্রান্ত এক মামলায় এমনই পর্যবেক্ষণ দিল্লি হাইকোর্টের।
মুখ্য তথ্য কমিশনারের (CIC) নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়ের করা মামলায় এই মন্তব্য করেছেন দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি শচীন দত্ত। বিচারপতির কথায়, জনগণের কোনও বিষয়ে কৌতূহল থাকলেই তা জনস্বার্থ বিষয়ক হয়ে যায় না।
আদালত স্পষ্ট বলেছে, নাগরিকরা কারও ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে কৌতূহলী হতে পারে, কিন্তু এই ধরনের কৌতূহল গোপনীয়তার আইনগত সুরক্ষাকে অগ্রাহ্য করে না।
রায়ে বলা হয়েছে, পরিকাঠামো কোনও তৃতীয় পক্ষের কাছে কারও নম্বর বা গ্রেড প্রকাশের অনুমতি দেয় না। শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগত রেকর্ড পরিচালনার ক্ষেত্রে আস্থা এবং গোপনীয়তার একটি অন্তর্নিহিত কর্তব্য রয়েছে কর্তৃপক্ষের।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রকাশ্যে আনা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে টানাপড়েন চলছে। প্রধানমন্ত্রীর পেশ করা হলফনামা অনুযায়ী, ১৯৭৮ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি বিএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ২০১৬ সালে তথ্য জানার অধিকার আইনে ১৯৭৮ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়া সব পড়ুয়াদের শিক্ষাগত যোগ্যতার নথি প্রকাশ্যে আনার আর্জি জানানো হয়। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় তা প্রকাশ করতে অস্বীকৃত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ও হাইকোর্টের মতোই বলেছিল, তৃতীয় কোনও পক্ষের কাছে এই সংক্রান্ত নথি দেখাবেন না তারা।
এরপর মুখ্য তথ্য কমিশনারের কাছে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রকাশ করার আর্জি জানানো হয়। কমিশনার ওই বছরই দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়কে নির্দেশ দেয় তথ্য প্রকাশের। কমিশনারের যুক্তি ছিল, প্রধানমন্ত্রীর মতো জনপ্রতিনিধিদের শিক্ষাগত যোগ্যতার নথি জনসমক্ষে আসা উচিত। এই নির্দেশের বিরুদ্ধে দিল্লি হাই কোর্টে যান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রায় ১০ বছর ধরে চলে এই মামলা।
কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা আদালতে জানিয়েছিলেন, কমিশনারের নির্দেশ মানলে কয়েক হাজার পড়ুয়ার গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘিত হবে। পাশাপাশি তাঁর দাবি ছিল, জনপ্রিয়তা অর্জনের জন্য রাজনৈতিক কারণে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রকাশ করার দাবি তুলেছেন আবেদনকারীরা। নানা সওয়াল-জবাব পর্বের পর অবশেষে এই নিয়ে রায় ঘোষণা করল দিল্লি হাইকোর্ট।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন