
এলআইসি-র বিরুদ্ধে আদানি গোষ্ঠীতে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের অভিযোগ করলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। গোটা বিষয়টি নিয়ে তিনি কেন্দ্র সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেছেন।
মঙ্গলবার রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেন, জনসাধারণের অর্থ বেসরকারি কর্পোরেট সংস্থার স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে। যা সঠিক কাজ নয়। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স মাধ্যমে তিনি লেখেন, “অর্থ, পলিসি, প্রিমিয়াম আপনার। আর সুরক্ষা, সুবিধা আদানির জন্য!”
আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জোন লিমিটেড (APSEZ) জানিয়েছে, তারা সদ্য দেশের সবচেয়ে বড় বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে ৫,০০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। এর আগে এত বড় বন্ড কেউ কেনেনি। বন্ড কিনেছে ভারতীয় জীবন বীমা কর্পোরেশন (LIC)। জানা গিয়েছে, ১৫ বছরের জন্য Non-Convertible Debenture-এর মাধ্যমে LIC-কে বন্ড বিক্রি করেছে আদানি গোষ্ঠী। বন্ডগুলি ৭.৭৫% বার্ষিক কুপন হারে জারি হয়েছে এবং বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হবে।
গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য বলছে, আদানি পোর্টসের কাঁধে ৩৬ হাজার ৪২২ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে। ঋণের দায়ে আদানি গোষ্ঠীর বন্দর সংস্থা যদি মুখ থুবড়ে পড়ে, সেক্ষেত্রে LIC-র গ্রাহকদের ক্ষতি কে পূরণ করবে, প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে।
APSEZ-এর দাবি, এই তহবিল সংগ্রহ তাদের ‘AAA/স্থিতিশীল’ ক্রেডিট রেটিং এবং শক্তিশালী আর্থিক ভিত্তির স্বীকৃতি। তবে কংগ্রেস ও বিরোধীরা দাবি করছেন, এই বিনিয়োগের ফলে সাধারণ মানুষের সঞ্চয় ঝুঁকির মুখে পড়বে।
সরকার পরিচালিত LIC দেশের অন্যতম বৃহৎ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী এবং এটি মূলত সাধারণ বীমা গ্রাহকদের প্রিমিয়াম থেকেই তহবিল তৈরি করে। এই পরিস্থিতিতে, আদানি গ্রুপের সঙ্গে LIC-এর লেনদেন রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে।
রাহুল গান্ধীর এই মন্তব্য ফের একবার কর্পোরেট এবং পাবলিক সেক্টরের সম্পর্ক ঘিরে স্বচ্ছতা ও পক্ষপাতিত্বের প্রশ্নকে সামনে এনেছে। যদিও আদানি গোষ্ঠীর তরফে বলা হয়েছে, এই বিনিয়োগ সম্পূর্ণরূপে বাজার-নির্ভর এবং আর্থিক বিবেচনার ভিত্তিতে হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন