
জম্মু ও কাশ্মীরের রাজৌরি জেলার বাধাল গ্রামে গত দেড় মাসে তিন পরিবারের ১৭ জন সদস্যের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। সকল চিকিৎসক ও প্যারামেডিক কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। রীতিমতো সতর্কতা জারি করেছে মেডিক্যাল বোর্ড। পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছে প্রশাসন। ওই ১৭ জন মৃতের মধ্যে ১৩ শিশুও ছিল।
রাজৌরি সরকারি মেডিকেল কলেজের (জিএমসি) অধ্যক্ষ ডাঃ অমরজিৎ সিং ভাটিয়া জানান, পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে মেডিকেল কলেজের আরও ১০ ছাত্রকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া, আক্রান্ত পরিবারের সংস্পর্শে থাকা ২৩০ জনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। চিকিৎসক এবং প্যারামেডিক কর্মীদের সমস্ত ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, মৃতদের মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রে ক্ষতির প্রমাণ মিলেছে। লখনউয়ের এক গবেষণাগারে নমুনা পরীক্ষার পর প্রাথমিক ভাবে এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে বলা জানা গেছে। জানা গেছে, এটি কোনো সাধারণ সংক্রমণ নয় বরং বিষক্রিয়ার ফল। বিষের সঠিক ধরণ নির্ধারণে তদন্ত চলছে।
প্রশাসন বাধাল গ্রামকে কন্টেনমেন্ট জোন হিসেবে ঘোষণা করেছে। সেখানে সব ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগকারী আত্মীয়স্বজনকে ইতিমধ্যেই কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডাঃ জিতেন্দ্র সিং বলেন, লখনউয়ের টক্সিকোলজি ল্যাবরেটরির প্রাথমিক তদন্তে এই মৃত্যুগুলির কারণ বা সংক্রমণ হিসেবে কোনো ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া যায়নি বরং কোনো বিষ থেকেই এই মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
তিনি আরও বলেন, বিষের প্রকৃতি নিয়ে পর্যবেক্ষণ চলছে। আমার বিশ্বাস শীঘ্রই এর সমাধান খুঁজে বের করতে পারব আমরা। তবে এর পিছনে কোনও চক্রান্ত আছে কিনা তারও তদন্ত করা হচ্ছে।
মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে কেন্দ্রীয় দল এবং পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) একসঙ্গে কাজ করছে। আক্রান্তদের নমুনায় নিউরোটক্সিনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। SIT ইতিমধ্যে ৫০ জনেরও বেশি লোককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। জানা গেছে প্রথমে জ্বর, তার পর বমি। তার পরই অচৈতন্য থাকার কয়েকদিন পর মৃত্যু হয়েছে তাঁদের।
জম্মুর মেডিক্যাল কলেজ এবং চণ্ডীগড়ের হাসপাতালে এখনও বেশ কয়েকজন এই উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসাবে তাঁদের নিভৃতবাসে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন