
আরও একবার রাজ্যপালের সরাসরি সংঘাত বাধলো কেরালার বাম সরকারের। স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে কেরালার রাজ্যপাল রাজেন্দ্র আরলেকারের (Rajendra Arlekar) এক নির্দেশিকা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী ও সিপিআইএম নেতা পিনারাই বিজয়ন (Pinarayi Vijayan) জানিয়েছেন, রাজ্যপাল সংঘ পরিবারের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়িত করতে চাইছেন।
স্বাধীনতা দিবসের আগের দিন ১৪ আগস্ট রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে “দেশভাগের ভয়াবহতা স্মরণ দিবস” (Partition Horrors Remembrance Day) পালন করার নির্দেশ দেন। রাজ্যপালের নির্দেশ মেনে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে দক্ষিণপন্থী সংগঠন আরএসএস-এর (RSS) ছাত্র শাখা অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (ABVP) এই দিন পালন করে। যদিও রাজ্যের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালই রাজ্যপালের নির্দেশ মানেনি।
রাজ্যপালের নির্দেশ প্রসঙ্গে কেরালার উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী আর বিন্দু (R Bindu), যিনি পদাধিকারবলে রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য হিসেবে রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যাল্যকে এই দিন পালন না করার নির্দেশ দেন। কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন রাজ্যপালের নির্দেশিকার কড়া সমালোচনা করে বলেন, রাজ্যপালের নির্দেশ আসলে আরও একভাবে সংঘ পরিবারের অ্যাজেন্ডার রূপায়ণ।
শিক্ষামন্ত্রী ভি শিবানকুট্টি এই অনুষ্ঠানকে "আরএসএস-সমর্থিত কর্মসূচি" এবং রাজ্যের কর্তৃত্বের উপর "স্পষ্ট হস্তক্ষেপ" বলে অভিহিত করেন। মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বলেন, "১৫ আগস্ট ভারতের সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রামের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়... রাজ্যপালের নির্দেশ... অসাংবিধানিক এবং অগ্রহণযোগ্য। কেরালা কখনই তার ক্যাম্পাসগুলিকে তাদের বিভাজনমূলক এজেন্ডার মঞ্চে পরিণত করতে দেবে না।"
কাসারগড়ের মঞ্জেশ্বর সরকারি কলেজে এই দিন পালন নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায় বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই এবং আরএসএস-এর ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-র মধ্যে। এবিভিপির অভিযোগ, এসএফআই সমর্থকরা তাদের পোষ্টার ছিঁড়ে দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১১ আগস্ট এই বিষয়ে নির্দেশিকা জারি করেছিলেন কেরালার রাজ্যপাল রাজেন্দ্র আরলেকর। রাজ্যপালের এই নির্দেশের পরেই ১৩ আগস্ট কেরালার উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী আর বিন্দু সাংবাদিকদের জানান, "সরকার মনে করে এই দিবসটি পালন না করা উচিত। উচ্চশিক্ষা বিভাগ বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে এই বিষয়ে অবহিত করবে। আমাদের রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজগুলি এমন একটি জায়গা যেখানে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করে। এখন পর্যন্ত আমরা উচ্চ মানবিক মূল্যবোধ ধারণ করেছি। আমরা এই অবস্থানেই আছি যে ক্যাম্পাসগুলি ধর্মনিরপেক্ষতার স্থান হওয়া উচিত... দেশভাগের ভয়াবহতা দিবস আগে কখনও পালিত হয়নি, এই ধরনের অনুষ্ঠান কেবল সামাজিক বিভাজনের দিকে পরিচালিত করবে।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন