
এক মহিলাকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল কর্ণাটকের বিজেপি বিধায়ক মুনিরত্ন এবং তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে। মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই ওই বিধায়কের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। মুনিরত্ন ছাড়াও তাঁর সহযোগী বসন্ত, চন্নকেশওয়া এবং কমলের নামও রয়েছে এফআইআরে। নির্যাতিতার অভিযোগ, গণধর্ষণের পরে তাঁর মুখে প্রস্রাব করা হয় এবং তাঁর শরীরে ইনজেকশনের মধ্যমে ক্ষতিকারক কোনও ভাইরাস ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বছর চল্লিশের ওই মহিলা নিজেকে বিজেপি কর্মী বলে পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, ঘটনাটি ঘটেছে ২০২৩ সালের ১১ জুন মাথিকেরের জেপি পার্কের কাছে অবস্থিত মুনিরত্নার অফিসে। বিধায়কের নির্দেশে তাঁকে বসন্ত এবং কমল সেখানে নিয়ে যান।
নির্যাতিতা পুলিশকে জানিয়েছেন, বসন্ত এবং চন্নকেশওয়া তাঁকে প্রথম বিবস্ত্র করার চেষ্টা করে। তিনি প্রতিবাদ করলে তাঁর ছেলেকে হত্যা করার হুমকি দেন বিধায়ক।
অভিযোগে নির্যাতিতা জানিয়েছেন, "মুনিরত্না এরপর বসন্ত এবং চেন্নকেশওয়াকে আমাকে ধর্ষণ করার নির্দেশ দেন। পরে, সে আমার মুখে প্রস্রাব করেন।"
নির্যাতিতার অভিযোগ, যখন এই ঘটনা ঘটছিল সময় এক অজ্ঞাত ব্যক্তি ঘরে প্রবেশ করেন এবং মুনিরত্নাকে একটি সাদা বাক্স দিয়ে যান। মুনিরত্না বাক্স থেকে একটি সিরিঞ্জ বের করে তাঁকে ইনজেকশন দেন। বিধায়ক তাঁকে হুমকি দেন, এই ঘটনা সম্পর্কে কাউকে কিছু বললে তাঁর পরিবারকে ধ্বংস করে দেওয়া হবে।
নির্যাতিতার আরও অভিযোগ, এই ঘটনা ঘটার আগে মুনিরত্নার নির্দেশে পিনিয়া এবং আরএমসি ইয়ার্ড থানায় তাঁর বিরুদ্ধে "মিথ্যা মামলা" দায়ের করা হয়েছিল এবং তাঁকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল। জেল থেকে মুক্তির পর, বসন্ত এবং কমল তাঁর বাড়িতে গিয়ে তাঁকে মুনিরত্নার অফিসে নিয়ে যান। প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়, মুনিরত্নার সাথে দেখা করলে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নেবেন মুনিরত্না।
মহিলা জানিয়েছেন, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তাঁর শরীরে এমন এক ভাইরাস রয়েছে যা সারানো যাবে না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তিনি মনে করেন, যৌন নিগ্রহের সময় তাঁর শরীরে যে ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছিল, এটা তারই ফল।
মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে বিধায়কের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। বিধায়কের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ডি (গণধর্ষণ), ২৭০ (জীবনের জন্য বিপজ্জনক এমন ভাইরাস শরীরে ঢোকানো), ৩২৩ (স্বেচ্ছায় আঘাত করা), ৩৫৪ (নারীর শালীনতা নষ্ট করার উদ্দেশ্যে তাঁর উপর আক্রমণ বা অপরাধমূলক বলপ্রয়োগ), ৫০৬ (ফৌজদারি ভীতি প্রদর্শন) এবং ৫০৯ (কোনও মহিলার শালীনতা নষ্ট করার উদ্দেশ্যে শব্দ, অঙ্গভঙ্গি বা কাজ) ইত্যাদি ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
তদন্তকারি সিনিয়র অফিসার জানিয়েছেন, এই মামলার তদন্তের জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল (এসআইটি)-এর কাছে অনুরোধ পাঠানো হবে। এসআইটি ইতিমধ্যেই মুনিরত্নের বিরুদ্ধে একাধিক মামলার তদন্ত করছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন