

শুধুমাত্র নামের কারণেই আবারও হিন্দুত্ববাদীদের আক্রমণের শিকার হায়দারাবাদের প্রসিদ্ধ করাচী বেকারি। পহেলগাঁও হামলার পর ভারত পাক দ্বন্দ্বের আবহে হায়দারাবাদের প্রায় ৭২ বছরের পুরোনো প্রতিষ্ঠানের ওপর গতকাল হামলা চালানো হয়। যদিও এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পাকিস্তানের কোনও সম্পর্ক নেই এবং দেশভাগের পর পাকিস্তান থেকে চলে এসে ১৯৫৩ সালে এই বেকারি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এক হিন্দু সিন্ধি ব্যবসায়ী খানচাঁদ রামনানি।
গত ৪৮ ঘণ্টায় একাধিকবার এই বেকারী হুমকির মুখোমুখি হয়েছে। পাশাপাশি সংস্থার আউটলেটের সামনে বিক্ষোভ, ভাঙচুরও চলেছে। বজরঙ দলের তেলেঙ্গানা শাখার পক্ষ থেকে ‘অপারেশান সিঁদুর’-এর পর হুমকি দিয়ে বলা হয়েছে, যখন ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের আবহ চলছে সেই সময় বজরং দল হুঁশিয়ারি দিয়ে জানাচ্ছে যারা পাকিস্তানকে ভালোবাসে তারা দেশ ছাড়ুক। যে সব সংস্থার নামের সঙ্গে পাকিস্তানের যোগ আছে তাদেরও নাম বদল করতে হবে। হায়দারাবাদের করাচী বেকারির নামও বদল করতে হবে। আমরা আমাদের সেনার পাশে আছি এবং যে কোনো পাকিস্তান যোগ আমরা মুছে ফেলবো। যদি তারা দোকানের নাম না বদলায় তাহলে কেউ আর ওই দোকানে আসবে না। যদি তারা নাম বদল করতে না চায় তাহলে আমরাই নাম বদল করে দেব।
হায়দারাবাদ ছাড়াও অন্যান্য প্রতিবেশী রাজ্যের একই ধরণের হুমকির মুখে পড়েছে করাচী বেকারী। বিশাখাপত্তনমে স্থানীয় বিজেপি এবং আরএসএস মদতপুষ্ট জনজাগরণ সমিতি একইভাবে হুমকি দিয়ে করাচী বেকারীর নাম বদলের দাবি জানিয়েছে। তাদের একটাই বক্তব্য, যে কোনও মূল্যে করাচী বেকারির নাম বদল করে এমন কোনও নাম রাখতে হবে যাতে ভারতীয়ত্বের ছোঁয়া থাকে। ঘটনার ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশ এসে হামলাকারীদের সরিয়ে দিচ্ছে। যদিও এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি পিপলস রিপোর্টার।
এই ঘটনার পরেই নিজেদের ইন্সটাগ্রামে এক বিবৃতি দিয়ে করাচী বেকারি জানিয়েছে, “করাচী বেকারী ১০০ শতাংশ ভারতীয় ব্র্যান্ড, যা ১৯৫৩ সালে হায়দারাবাদে প্রতিষ্ঠিত। আমাদের সংস্থার নাম আমাদের ইতিহাসের অংশ, যার সঙ্গে জাতীয়তাবাদের কোনও সম্পর্ক নেই। আমাদের পাশে দাঁড়ান…এক ভারতীয় পণ্য, যারা ভালোবেসে ভারতের জন্য কাজ করে।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন