
উত্তরাখণ্ডে ভারতের নিয়ন্ত্রক ও নিরীক্ষক জেনারেল (CAG)-এর ২০২১-২২ অর্থবর্ষের রিপোর্টে উঠে এল ব্যাপক বেনিয়মের ছবি। যেখানে দেখা যাচ্ছে সরকারি টাকা কাজে লাগানো হয়েছে ব্যক্তিগত চাহিদা মেটাতে। কেনা হয়েছে আইফোন, ল্যাপটপের মতো যান্ত্রিক সরঞ্জাম। যার মধ্যে রয়েছে বন বিভাগ, শ্রমিক কল্যাণ বোর্ড এবং স্বাস্থ্য বিভাগের জন্য বরাদ্দ করা অর্থ।
শুক্রবার উত্তরাখণ্ড বিধানসভায় বাজেট অধিবেশন চলাকালীন বিষয়টি তুলে ধরা হয়। বলা হয়, যে রাজ্যের বন, স্বাস্থ্য বিভাগ এবং শ্রমিক কল্যাণ বোর্ড সরকারি পরিকল্পনা ও অনুমতি ছাড়াই তহবিল ব্যবহার করেছে। ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে শ্রমিক কল্যাণ বোর্ড সরকারের অনুমোদন ছাড়াই ৬০৭ কোটি টাকা ব্যয় করেছে।
ক্ষতিপূরণমূলক বনায়ন তহবিল ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনা কর্তৃপক্ষ (CAMPA) থেকে ১৪ কোটি টাকার তহবিল অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। এই অর্থ দিয়ে ভবন সংস্কার, আদালতের মামলার খরচ মেটানো এবং ল্যাপটপ, ফ্রিজ ও কুলার কেনা হয়েছে। অথচ CAMPA মূলত বন সংরক্ষণ ও পুনঃবৃক্ষায়নের জন্য বরাদ্দকৃত তহবিল পরিচালনা করে।
CAG-এর রিপোর্টে আরও জানা যায়, ক্ষতিপূরণমূলক বনায়নের জন্য জমি নির্বাচনে ভুল ছিল। যে কাজ এক-দুই বছরের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার কথা, তা ৩৭টি ক্ষেত্রে আট বছরেরও বেশি সময় নিয়েছে। এছাড়া, ২০১৪ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ৫২টি প্রকল্প বিভাগীয় বন কর্মকর্তার (DFO) অনুমতি ছাড়াই শুরু করা হয়েছে।
শুধুমাত্র বন বিভাগেই নয়। অনিয়মের ছবি ধরা পড়েছে স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও। CAG-র রিপোর্টে সরকারি হাসপাতালে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিতরণের বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। তিনটি হাসপাতালে ৩৪টি মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ পাওয়া গেছে। ওষুধগুলির মেয়াদ দুই বছরেরও বেশি সময় আগে শেষ হয়ে গিয়েছিল।
এছাড়া, রাজ্যে সুপার স্পেশালিস্ট ডাক্তারদের অভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। পাহাড়ি এলাকায় বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের ৭০% পদ এবং সমতল অঞ্চলে ৫০% পদ খালি রয়েছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
এই প্রতিবেদন সামনে আসার পরই বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে কংগ্রেস। তাদের অভিযোগ, সরকারের টাকা অপচয় হচ্ছে কিছু কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে না।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন